দেশজুড়ে

সাংবাদিক লাঞ্ছিতের ঘটনায় নির্বাক কর্তৃপক্ষ

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দুই সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় এক সপ্তাহ পার হলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষুদ্ধ হয়েছেন নড়াইলের সাংবাদিক সমাজ। গত ৬ জুন নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আহতদের ছবি তোলার সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত মেডিক্যাল অফিসার ডা. লিপিকা রানী ও ওয়াসি উদ্দীন আহমেদ এবং তাদের সহকারী প্রশান্ত ঘোষ স্থানীয় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে বাঁধা দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সময় একটি বেসরকারি চ্যানেল (একুশে টেলিভিশন) এবং জাতীয় দৈনিকের (বাংলাদেশ প্রতিদিন) জেলা প্রতিনিধিকে লাঞ্ছিত করা হয়। এদিকে, এ ঘটনায় নিজের দোষ স্বীকার করে প্রশান্ত ঘোষ মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আর জীবনে এ ধরনের (অশালীন আচরণ) করব না। ওনার (ডা. লিপিকা) কথায় আমি হঠাৎ করে ইমোশন্যাল (ভাবোদ্দীপক) হয়ে গেছি। ক্যান (কেন) হঠাৎ করে এমন হয়ে গেছে, সেটা আমি জানি না।’ এ ধরনের স্বীকারোক্তির পরও কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।  লাঞ্ছিত সাংবাদিকরা জানান, ছবি তুলতে বাঁধা দিয়ে ডা. লিপিকা ও ওয়াসি উদ্দীন উচ্চ স্বরে চিৎকার করেন। এ সময় তারা বলেন, ছবি তুলতে অনুমতি লাগে। কে আপনাদের ছবি তোলার অনুমতি দিয়েছে? ছবি তোলার কোনো প্রয়োজন নেই। আপনারা বেরিয়ে যান! এ সময় চিকিৎসকদের সহকারী প্রশান্তও আক্রমণাত্মক ভাষায় তাদের দিকে তেড়ে আসেন। এক পর্যায়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন ওই দুই সাংবাদিক। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ (অন্য মাধ্যমে ধারণকৃত) দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন নড়াইলে কর্মরত সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। অভিযোগ রয়েছে, ডা. লিপিকা ও ওয়াসি উদ্দীন স্থানীয় চিকিৎসক হওয়ায় রোগী, অভিভাবকসহ সব পেশার মানুষের সঙ্গে সব সময় দাম্ভিকতা দেখান। লিপিকার বাড়ি লোহাগড়ার জয়পুর এবং ওয়াসি উদ্দীনের বাড়ি শালনগর গ্রামে বলে জানা গেছে। এদিকে, প্রশান্ত কুমারের বাড়ি লোহাগড়ার কলাগাছি গ্রামে হওয়ায় তিনিও স্থানীয় প্রভাব দেখিয়ে থাকেন। গ্রাম্য রাজনীতির প্রভাব খাটিয়ে সাংবাদিকসহ চিকিৎসাসেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এতে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা।এদিকে, দুই সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার খবর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে গত বৃহস্পতিবার ও বুধবার চারটি জাতীয় দৈনিক (নয়া দিগন্ত, জনতা, আজকালের খবর ও আমার সংবাদ) পত্রিকা নড়াইলে ঢুকতে দেয়া হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়া মোড় এলাকা থেকে পত্রিকা পরিবেশকদের সব ব্যান্ডেল সরিয়ে ফেলা হয়। এ কারণে এসব পত্রিকায় প্রকাশিত খবর পাঠকেরা পড়তে পারেননি বলে জানিয়েছেন নড়াইলের পত্রিকা পরিবেশক স্বপন কুন্ডুসহ অন্যান্য পরিবেশকরা।  হাফিজুল নিলু/এসএস/আরআইপি