এলিজা বিনতে এলাহী
বাণীগ্রাম শিখ মন্দির! দক্ষিণ চট্টগ্রামের শিক্ষা উন্মেষের সাথে জড়িয়ে আছে যে মন্দিরটি। মন্দিরের সংস্কার কাজটি ভালো হয়নি। দ্বিতল মন্দিরের সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠা যায়। তবে ওপরে অনেক ঝোঁপঝাড় জন্মেছে ও কিশোরদের আড্ডা। তাই তাড়াতাড়ি নেমে এসেছি।
এই মন্দির থেকেই ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করেছিল বাণীগ্রাম সাধনপুর উচ্চবিদ্যালয়। কয়েক বছর পর বিদ্যালয় নতুন ভবনে স্থানান্তর হলেও এই মন্দির হয়ে ওঠে আবাসিক ছাত্রাবাস—যেখানে শতবর্ষজুড়ে বসবাস ও পড়াশোনা করেছেন অসংখ্য শিক্ষার্থী।
বাঁশখালী সম্পর্কে বিভিন্ন ইতিহাস গ্রন্থেও এই শিখ মন্দিরে বাণীগ্রাম বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়টি জেনেছি। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ওই এলাকার তৎকালীন জমিদার রায় পরিবারের হাতে।
ইতিহাসবিদদের মতে, বাঁশখালীর বাণীগ্রামে একসময় কিছু শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ ছিলেন। রায় পরিবার আসার আগেই তারা এই অঞ্চলে আসেন। জনশ্রুতি রয়েছে, বাণীগ্রামে রায় পরিবারের কাছে গুরুগোবিন্দ সিংয়ের হাতে লেখা এক কপি শিখ ধর্মগ্রন্থ ‘গ্রন্থ সাহেব’ ছিল একসময়।
প্রতিষ্ঠার কোনো নির্দিষ্ট সাল জানা না গেলেও ১৭৫৮ থেকে ১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দে ফৌজদার মহাসিংয়ের আমলে এ শিখ মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। ফৌজদার এবং তাঁদের সহযোগী সহযাত্রীদের ধর্মীয় আচার-আচরণ পালনের সুবিধার্থে শিখরা এ মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রয়াত ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আবদুল করিমও লিখেছেন, ‘বাণীগ্রামের রায় স্টেট অনেক প্রাচীন। বাণীগ্রাম হাইস্কুলের হোস্টেলটি মূলতঃ একটি শিখ মন্দির। এখানে শিখ সম্প্রদায়ের বসবাসের প্রমাণ আছে। শিখ ধর্মগ্রন্থ ‘গ্রন্থ সাহেব’ পাওয়া গেছে এখানে। জমিদারি প্রতিষ্ঠার আগ থেকেই শিখরা এখানে আসতেন। তাঁরাই এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।’
(১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, দুপুর ০২টা ৪৬ মিনিট)
এসইউ/জেআইএম