জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবির পর অবশেষে এ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে ২৭ নভেম্বর।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ৮ অক্টোবর থেকে নির্বাচন কমিশন গঠন ও কার্যক্রম শুরু হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ৮ অক্টোবর ছাত্র সংগঠন, সাংবাদিক সংগঠন ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরপর ধাপে ধাপে তফসিল ঘোষণা, ভোটার তালিকা প্রস্তুত, মনোনয়ন জমা ও যাচাই–বাছাইসহ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। সবশেষে ভোটগ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশের মাধ্যমে নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হবে।
জকসুর রোডম্যাপ অনুযায়ী, আগামী ৮ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন গঠন ও কার্যক্রম শুরু হবে এবং পরবর্তী ৪৮ দিনের মধ্যে জকসু নির্বাচন সম্পন্ন হবে। তবে কমিশন গঠন ও পুরো কর্যক্রমের রোডম্যাপ বিধিমালা অনুমোদন সাপেক্ষে বাস্তবায়ন হবে।
নির্বাচনী কর্যক্রম শুরুর দ্বিতীয় থেকে দশম দিনের মধ্যে ছাত্র সংগঠন, সাংবাদিক সংগঠন, ও অন্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে জকসু নির্বাচন নীতিমালা ও আচরণবিধি প্রণয়ন; ১১তম দিনে জকসু নির্বাচন তফসিল ও আচরণবিধি ঘোষণা; ১৮তম দিনে খসড়া ভোটার তালিকা প্রস্তুত; ১৯তম দিনে ভোটার তালিকা প্রকাশ; ২৫তম দিনে ভোটার তালিকা সংশোধন; ২৮তম দিনে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ; ৩৫তম দিনে মনোনয়ন জমাদান; ৩৭তম দিনে মনোনয়ন বাছাই; ৩৯তম দিনে আপত্তি নিষ্পত্তি; ৪০তম দিনে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ; ৪৬তম দিনে নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রম; ৪৮তম দিনে ভোটগ্রহণ ও অফিসিয়াল ফলাফল প্রকাশ।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো- শিক্ষার্থীদের সম্পূরক বৃত্তি কবে থেকে কার্যকর হবে, তা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে; ক্যাফেটেরিয়ার ভর্তুকি প্রদান করে স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রন নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন জকসু নির্বাচনসহ ৩ দাবিতে অনশনরত ৩ শিক্ষার্থী অসুস্থএদিকে জকসু ছাড়াও বৃত্তি ও ক্যাফেটেরিয়ার বিষয়ে প্রশাসন থেকে বিবৃতি দিলেও তা মানতে নারাজ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শাহিন মিয়া বলেন, প্রশাসনের বিবৃতিতে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। কারা এ সুবিধা পাবে, কতজন শিক্ষার্থী পাবে এবং কত টাকা দেওয়া হবে সে বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা নেই। একইভাবে ক্যাফেটেরিয়া সম্পর্কেও কোনো পরিষ্কার সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। তাই আমরা এই বিবৃতিকে প্রত্যাখ্যান করেছি।
তবে তৃতীয় দফা সুস্পষ্ট করে বললে আজ রাতে তারা অনশন প্রত্যাহার করবে বলে জানান। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা অনশন ভাঙেনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীরা যেসব দাবি জানিয়েছিল আমরা তা নির্দিষ্ট করে লিখিতভাবে মেনে নিয়েছি। আগামী ২৭ নভেম্বর নির্বাচন হবে। সকল বিষয়ই পরিষ্কার। আমি নিজে তাদের কাছে গেছি। অনশন ভাঙার জন্য অনুরোধ করেছি কিন্তু তারা ভাঙেনি। আমি আর কী করতে পারি
জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পাঁচ নেতা ক্যাম্পাসে অনশন শুরু করেন। একই দিনে বিকেলে জকসু নীতিমালা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফয়েজের সঙ্গে দেখা করেন জবি শাখা ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ।
টিএইচকিউ/বিএ/জেআইএম