অর্থনীতি

নিরাপদ মাছ উৎপাদন নিশ্চিতে জাতীয় মৎস্য নীতির খসড়া

রাসায়নিক ও জীবাণুমুক্ত নিরাপদ মাছ উৎপাদন, সরবরাহ ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করার তাগিদ অন্তর্ভুক্ত রেখে ‘জাতীয় মৎস্য নীতি ২০২৫’ এর খসড়া করেছে মৎস্য অধিদপ্তর।

এরই মধ্যে এই খসড়া নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দেশের প্রোটিনের চাহিদা পূরণে এই খাতের ১৯৯৮ সালের এই নীতিমালা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ নীতিতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) মোকাবিলার মাধ্যমে দেশের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করতে সক্ষম এমন একটি মৎস্য নীতি কাঠামো তৈরি করার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে নীতিতে।

খসড়া নীতিমালায় মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত জলবায়ু শরণার্থীদের সমস্যা, স্থানীয় পর্যায়ে তহবিল সরবরাহ, সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং মাছের আমদানি-রপ্তানি সম্পর্কিত দিকগুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে।

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুর রউফ বলেছেন, খসড়া নীতিটি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। শিগগির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে। আলোচনার ভিত্তিতে খসড়ায় প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা হবে।

মৎস্য খাতে পলিসির দিক থেকে বেশ সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। যার মূল লক্ষ্য—রাসায়নিক, জীবাণুজীব ও বিপজ্জনক উপাদানমুক্ত নিরাপদ মাছ উৎপাদন নিশ্চিত করা।

বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ অভ্যন্তরীণ ও সামুদ্রিক জলাশয়ের আবাসস্থল বাংলাদেশ, হ্যাচারি ও বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে মাছ উৎপাদন ৫০ লাখ টনের বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ উৎপাদন এসেছে চাষের মাধ্যমে, ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে যা ছিল ১৬ শতাংশ। মাছ চাষ খাতের এই দ্রুত বৃদ্ধি দেশীয় চাহিদা মেটানো ছাড়াও রপ্তানিতে সহায়ক হিসেবে কাজ করছে।

তবে এই সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিকের অবাধ ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকরা বারবার সতর্ক করেছেন, মাছ চাষে অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) বাড়ছে, যা মানব ও প্রাণী স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

এনএইচ/বিএ