জাতীয়

কঠোরতায় বেড়েছে ওমরাহ ভিসার ফি

সৌদি সরকার ওমরাহ ভিসা ইস্যুতে কড়াকড়ি আরোপ করায় বাংলাদেশ থেকে ওমরাহ পালনে অতিরিক্ত ফি গুনতে হচ্ছে। শুধু ভিসা করতে বাংলাদেশি ওমরাহ যাত্রীদের তিন থেকে ১০ হাজার টাকা বেশি দিতে হচ্ছে।

ওমরাহ যাত্রী এবং এজেন্সিগুলোর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। ভিসা খরচ বাড়ায় ওমরাহ প্যাকেজের খরচও বেড়ে গেছে।

ওমরাহ যাত্রীরা বলছেন, কিছুদিন আগেও ওমরাহ ভিসা ফি ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা ছিল। কিন্তু এখন তা বেড়ে ২১ থেকে ২৮ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়েছে।

এজেন্সি মালিকরা বলছেন, ওমরাহ যাত্রীদের ভিসা ইস্যুর ক্ষেত্রে সৌদি সরকার নিয়মকানুন কঠোর করেছে। তাই সৌদির ওমরাহ কার্যক্রম পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত ফি আদায় করছে। তাদেরও সেটি দিতে হচ্ছে।

তবে অভিযোগ আছে, অনেক এজেন্সি নতুন নিয়মের দোহাই দিয়ে ওমরাহ ভিসার ক্ষেত্রে যথেচ্ছভাবে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। আগে এজেন্সির লাইসেন্স ছাড়া ভিসা করা গেলেও এখন লাইসেন্সধারীরা ছাড়া অন্যরা ভিসা করতে পারছেন না। তাই লাইসেন্সধারী এজেন্সিগুলোর ভিসার চাহিদা বেড়ে গেছে। এ সুযোগে তারাও অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ওমরাহ ভিসা আবেদন করতে হয় ‘নুসুক মাসার’ অ্যাপের মাধ্যমে। এখন হোটেল ও পরিবহন ব্যবস্থা এই অ্যাপের সঙ্গে সংযুক্ত। এমনকি ট্যাক্সিও পোর্টালের মাধ্যমে বুক করতে হয়, যাতে শুধু অনুমোদিত পরিষেবা ব্যবহার করা যায়।

এছাড়া আগে ভিসার পরে হোটেল বুকিং কিংবা পরিবহনের ব্যবস্থা করা হতো। এখন এ সেবাগুলো নিশ্চিত করেই ভিসা আবেদন করতে হয়। এছাড়া সৌদি আরবের অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে প্যাকেজ বুকিং করতে হয়।

ওমরাহ ভিসা সহজ হওয়ায় এ ভিসার মাধ্যমে মানবপাচার হতো। অনেকে থেকে যেতো। তাই সৌদি সরকার এক্ষেত্রে নিয়ম-কানুন কঠোর করেছে বলে জানিয়েছেন এজেন্সি মালিকরা।

এ বিষয়ে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘নতুন নিয়মের কারণে আগে ভিসা হতো এমন অনেক আইডি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন শুধু বাংলাদেশের লাইসেন্সধারী এজেন্সিগুলোকে সৌদি আরবের অনুমোদিত সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে ভিসা নিতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আগে হয়তো সৌদি আরবে একটি লাইসেন্সের বিপরীতে ৫০ হাজার ভিসা করতো। এখন কিন্তু সে পাঁচ হাজারের বেশি ভিসা করতে পারছে না। স্বাভাবিকভাবে সে তার খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে।’

‘এছাড়া নতুন নিয়ম অনুযায়ী আমাদের লাইসেন্সধারী ওমরা এজেন্সিগুলো সৌদি অংশের সঙ্গে কানেক্টেড হচ্ছে। এতে একটু সময় লাগছে। এখন হোটেল বুকিং ও পরিবহন বুকিংয়ের নম্বর ছাড়া ভিসা হচ্ছে না। একটি নতুন সিস্টেমে সবকিছু নিয়ে আসা হচ্ছে। আগে ভিসার জন্য এত নিয়মকানুন ছিল না।’

ফরিদ আহমেদ মজুমদার আরও বলেন, ‘আশা করি এক সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে এবং এতে ভিসা ফিও কিছুটা হয়তো কমবে। তবে নতুন সিস্টেমের কারণে আগের চেয়ে কিছুটা বেশি ভিসা ফি দিতে হবে।’

আরএমএম/এমকেআর/জিকেএস