ক্যাম্পাস

বুয়েটের ক্লাসরুমে যথেষ্ট ফ্যানই নেই, এসি তো পরের কথা

ডাকসু ভবনে এসি বসানো নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রনেতা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে তুমুল আলোচনা। সে আলোচনায় এবার যোগ দিলেন ছাত্রলীগের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার আবরার ফাহাদের ছোট ভাই বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ।

তবে ঢাবি নিয়ে নয়, আবরার ফাইয়াজের আক্ষেপ তার নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুয়েটের শ্রেণিকক্ষ, আবাসিক হল, ল্যাবরেটরির মান নিয়ে। তার ভাষ্য, ‘এসি তো অনেক পরের কথা, বুয়েটের ক্লাসরুমে যথেষ্ট ফ্যানই নেই!’

বুধবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে আক্ষেপের সুরে এসব কথা লিখেছেন আবরার ফাইয়াজ।

ফেসবুক পোস্টে ফাইয়াজ লেখেন, ‘ডাকসুতে এসি লাগানো নিয়ে অনেক আলোচনা দেখলাম। তো মোটামুটি খুঁজতেছিলাম যে, ঢাবির ক্লাসরুমে এসি নাই- এমন কোনো কথা কেউ বলে কি না। কিন্তু কোথাও এই কথা না দেখে বুঝলাম, তাদের হয়তো সব ক্লাসরুমেই এসি আছে, তাই অন্যত্র নিয়ে এত কথা।’

আরও পড়ুনবুয়েটের শেরে বাংলা হলে আবরার ফাহাদ স্মৃতিফলক উন্মোচন আবরার ফাহাদ স্মরণে জাবিতে ‘রুম নম্বর ২০১১’ প্রদর্শনী 

‘বুয়েট থেকে দেখে ভালোই লাগলো। ফেসবুকে ঢুকলেই দেখি, আমাদের পেছনে নাকি সরকার সবচেয়ে বেশি খরচ করে। অথচ বুয়েটের কোনো একটা ডিপার্টমেন্টের একটা ক্লাসরুমেও এসি নাই। স্যারদের কাছে গেলেই বলেন, আমাদের টাকা নাই, বুয়েটের ব্যালান্স নাকি মাইনাস। অবশ্য এসি তো আরও পরের কথা, ক্লাসরুমগুলোতে যথেষ্ট ফ্যানই নাই।’

তিনি আরও লেখেন, ‘আমাদের ক্লাস হয় সম্ভবত বাংলাদেশের সবচেয়ে বাজে এয়ার ভেন্টিলেশন থাকা মেকানিক্যাল বিল্ডিংয়ে। বেঞ্চগুলোও ম্যাক্সিমাম বসার অযোগ্য ও পাকিস্তান আমলের। গরমকালে রুমগুলোয় ফিলস লাইক ৪০ ডিগ্রি তো পার হয়ই, সঙ্গে দমবন্ধও হয়ে আসে। আমার নিজের ক্লাসেই একাধিকবার সেন্সলেস হতে দেখেছি। টিচাররা গরমে ক্লাসেই আসেন না।’

‘আরও মজার ব্যাপার, বুয়েট পাবলিক হলেও লাস্ট ২৪ ব্যাচকে ঢোকার সময় ২৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে শুধু হলের জন্য এবং পরের ৩ বছরেও দেওয়া লাগবে। সঙ্গে প্রতি মাসে বাধ্যতামূলক ২৪০০ টাকা দেওয়া লাগে ডাইনিং চার্জ। মানে বছরে মিনিমাম ৫০ হাজার টাকা বুয়েটকে আপনি দিতে বাধ্য যদি আপনি হলে থাকেন। আমার তিতুমীর হলেই ২ জনের জন্য ডিজাইনড রুমে ৫-৬ জন করে থাকা লাগে (অন্য হলে ৮-৯জনও), ইভেন লাস্ট ইয়ারে শুধু ৪ জন করে থাকা যায়।’

আবরার ফাইয়াজ আরও লেখেন, ‘এত টাকা দেয় পোলাপান, তাও তারা ক্লাসরুমেই এসি পায় না। সরকারের টাকা কোথায় যায় সেই হিসাব আর কী চাইবো। আমার কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের ক্লাসরুমও সম্ভবত বুয়েটের ক্লাসরুম থেকে বেটার। দেশের অন্য জায়গার অবস্থা আরও খারাপ নিঃসন্দেহে, এইজন্যই আসলে এগুলো নিয়ে কথা হয় না। কিন্তু সরকার সবচেয়ে বেশি খরচ করা জায়গার অবস্থাও এই আর কী!’

এএএইচ/কেএসআর/জিকেএস