মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির দ্বিতীয় দিন জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসকদের কাজটা খুবই সংবেদনশীল ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এস এম জিকরুল ইসলাম। তিনি বলেন, হাসপাতালে বাচ্চাদের স্বজনদের মানসিক পরিস্থিতি আমরা দেখেছি। সেই মুহূর্তে তাদের সাপোর্ট দেওয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
তিনি আরও বলেন, প্রথমদিকে রোগীর স্বজনরা প্রশ্ন করতো- আমার বাচ্চাটা কি বাঁচবে? আমার বাচ্চাটা এখন কোথায়? আমি খুঁজে পাচ্ছি না তো! আমরা আশ্বস্ত করতাম- আপনার বাচ্চাটা আইসিইউতে আছে, ভালো আছে, আমরা চেষ্টা করছি। এইটুকু কথাও তাদের মনে আশার সঞ্চার করতো।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ‘বিপর্যয়-জরুরি অবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির সময় মানসিক চিকিৎসার অভিজ্ঞতা নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুনপড়ালেখার ধরন বদলে যাওয়ায় মানসিক চাপে শিশু শিক্ষার্থীরাদুর্যোগ পরিস্থিতিতে প্রতি পাঁচজনে একজন মানসিক রোগে আক্রান্ত হন
ডা. এস এম জিকরুল ইসলাম বলেন, অনেকে এসে অভিযোগ করছিল- রিকশাওয়ালারা বেশি ভাড়া নিচ্ছে, সিএনজি আসছে না, মোটরসাইকেলওয়ালা নিতে চাচ্ছে না। অনেকে হেঁটে এসে পৌঁছেছে। এসব কারণে তাদের মানসিক চাপ আরও বেড় যায়। ওই সময়ে আইসিইউ বা এইচডিইউর ভেতরের দৃশ্য বর্ণনা করা যায় না। ছোট ছোট বাচ্চারা ক্লাস থ্রি-ফোরের, তাদের ৬০ শতাংশ, ৭০ শতাংশ, ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বার্ন। বেডে কষ্টে ছটফট করছে। খুবই খারাপ অবস্থা ছিল। অনেকেই মারা গেছে, কিছু বাচ্চা এখনও আছে।
এখন নিয়মিত দগ্ধদের পর্যবেক্ষণে না গেলেও ফলোআপে আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এখন রেগুলারলি যাচ্ছি না, কিন্তু ফলোআপে আছি। অনেকে বলছেন, আমি অনেক চিন্তা করে ভালো একটা স্কুলে ভর্তি করেছিলাম, মাইলস্টোনে। এখন আমার বাচ্চাটা এই অবস্থায়। ও সামনে কীভাবে আগাবে? অনেকে পড়াশোনা থেকে ছিটকে যাচ্ছে। কেউ কেউ মানসিকভাবে এখনও সামলে উঠতে পারেনি।
তিনি বলেন, ঘটনার পরদিন আমাদের বিভাগীয় প্রধান স্যারের তত্ত্বাবধানে একটা টিম গঠন করা হয়। প্রতিদিন একটা করে টিম ওখানে যেতাম। যেখানে সাইকিয়াট্রিস্ট, ট্রেইনি সাইকিয়াট্রিস্ট, সাইকোলজিস্ট সবাই থাকতো।
আরএএস/এএমএ/জিকেএস