লাইফস্টাইল

ফলপ্রত্যাশীদের পরিবারের প্রতিক্রিয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ

আগামীকাল (১৬ অক্টোবর) প্রকাশিত হবে দেশের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল। প্রতি বছরই সময়টা অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের জন্য উদ্বেগ, আশা আর উৎকণ্ঠায় ভরা। কেউ ভালো ফলের স্বপ্ন দেখে, কেউ আবার ভয় পায় যদি প্রত্যাশা পূরণ না হয়!

কিন্তু মনে রাখা দরকার — একটি ফলাফল জীবনের চূড়ান্ত মূল্যায়ন নয়। মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলে এই সময়টা কাটানো যায় শান্ত ও ইতিবাচকভাবে।

ফলাফলই শেষ কথা নয়

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদন বলছে, কিশোর বয়সে আত্মসম্মান ও মানসিক চাপের ভারসাম্য রাখা ভবিষ্যৎ মানসিক সুস্থতার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি। তাই ফলাফলে হতাশা আসতেই পারে, কিন্তু তা যেন নিজের প্রতি আস্থা নষ্ট না করে। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, পরীক্ষার ফলাফল হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের পারফরম্যান্স, কিন্তু তা কখনোই কারও মেধা বা সম্ভাবনার পূর্ণ চিত্র নয়।

হতাশ হলে কী করবেন

২০২২ সালে জার্নাল অব অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিক্ষার্থী ফলাফলের পর আত্মসমালোচনায় ডুবে যায়, তাদের মধ্যে বিষণ্নতার ঝুঁকি দ্বিগুণ বেড়ে যায়। গবেষকরা বলছেন, এর পরিবর্তে আত্ম–সহানুভূতির চর্চা করা দরকার। নিজের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকা মানে ভুলগুলো স্বীকার করা, কিন্তু নিজেকে দোষারোপ না করা।

পরিবার কীভাবে সহায়তা করতে পারে

অভিভাবকদের ভূমিকা এই সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সন্তান আশানুরূপ ফল না পেলে তার সঙ্গে তুলনা নয়, বরং সহানুভূতি দেখান। ‘তুমি চেষ্টা করেছ, আমরা তোমার পাশে আছি’ — এই কয়েকটি কথা সন্তানের মানসিক চাপ অনেকটা হালকা করতে পারে। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ফলাফল ঘোষণার সময় পরিবারের আবেগীয় পরিবেশই নির্ধারণ করে সন্তানের প্রতিক্রিয়া কতটা ইতিবাচক হবে।

নতুন করে শুরু করা

জীবনে ব্যর্থতা আসতেই পারে — তা হোক পরীক্ষায়, চাকরিতে বা সম্পর্কে। ২০২৩ সালে জার্নাল অব পজিটিভ সাইকোলজি-তে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ব্যর্থতার পর যারা কৃতজ্ঞতা বা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখেন, তাদের পুনরায় উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি। তাই ফলাফল যাই হোক, কিছুটা সময় নিয়ে নিজের আগ্রহ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে ভাবুন। নতুন পথ খোঁজার সুযোগ সবসময়ই থাকে।

মনে রাখবেন

ফলাফল জীবনের কেবল একটি ধাপ। এটি আপনার পরিচয় নয়, আপনার সম্ভাবনাও নয়। মানসিক শক্তি, আত্মবিশ্বাস আর ধৈর্যই আপনাকে পরবর্তী পথে এগিয়ে নেবে।

সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জার্নাল অব অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ, আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, জার্নাল অব পজিটিভ সাইকোলজি

এএমপি/জেআইএম