রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে পোশাক কারখানা ও কেমিক্যাল গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)। একইসঙ্গে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, আহতদের জরুরি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন এবং নিহতদের পরিবারকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়েছে আইন সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠানটি। এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) ব্লাস্টের কমিউনিকেশন বিভাগ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪ সালে বেইলি রোড ও ২০২১ সালে সেজান জুস কারখানার অগ্নিকাণ্ডসহ একাধিক ঘটনায় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, জবাবদিহিতার অভাব, কার্যকর ও বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যর্থতা এবং সর্বোপরি বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ বিলম্ব দেখা যায়। ফলে এরূপ মর্মান্তিক ঘটনা বারবার ঘটছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বেশকিছু দাবি ও সুপারিশ তুলে ধরেছে ব্লাস্ট। সেগুলো হলো—১. নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ীদের বিচার: অগ্নিকাণ্ডের কারণ দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে তদন্ত করে দায়ীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।২. ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন: ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও পরিবারের জন্য আইন ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে, যা মালিকপক্ষ প্রদানে বাধ্য এবং এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। আইন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডসহ উচ্চআদালতের নজিরসমূহ অনুসরণে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ এবং আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।৩. আইনি সহায়তা: ক্ষতিগ্রস্তদের অধিকার রক্ষায় ব্লাস্ট বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দিতে প্রস্তুত। যাদের আইনি সহায়তা প্রয়োজন, তাদের নিকটস্থ ব্লাস্ট কার্যালয়ে অথবা ব্লাস্টের হেল্পলাইন (০১৭১৫২২০২০) নম্বরে যোগাযোগের আহ্বান জানানো হচ্ছে।৪. রাসায়নিক গোডাউনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা: বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থের অনিরাপদ সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবে এরূপ দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এসব গুদামে নিরাপত্তাবিধি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।৫. নিয়মিত রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট ও মনিটরিং: রাসায়নিক শিল্প ও গুদামগুলোতে নিয়মিত ঝুঁকি মূল্যায়ন, মনিটরিং ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধ করা যায়।৬. স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত প্রভাব মোকাবিলা: আগুনে সৃষ্ট বিষাক্ত ধোঁয়া ও রাসায়নিক দূষণ স্থানীয় জনগণ ও পরিবেশের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করতে পারে। সরকারকে দ্রুত পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পরিবেশ পুনর্বাসনে পদক্ষেপ নিতে হবে। দায়ীদেরও যথাযথভাবে বিচার ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের মুখোমুখি করতে হবে।
এফএইচ/এমএমকে/জিকেএস