দীপাবলি হলো আলো ও আনন্দের উৎসব। দীপাবলি রাতে চারদিকে নিকষ অন্ধকার থেকে মুক্তি পেতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সর্বত্র প্রদীপ জ্বালিয়ে আলোকিত করে রাখে। তাদের বিশ্বাস নিকষ অন্ধকারেই অশুভ আত্মা ও শক্তি সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাই এই অশুভ শক্তিকে দুর্বল করতে ঘরের প্রতিটি কোনায় বাতি বা প্রদীপ জ্বালানো হয়। তবে এই আনন্দের সঙ্গে থাকে আগুন লাগার ঝুঁকি।
তাই দিকনির্দেশনা মেনে নিরাপদভাবে দীপাবলি উদযাপন করা অত্যন্ত জরুরি। আসুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে প্রদীপ জ্বালানোর ক্ষেত্রে সর্তক থাকবেন -
১. প্রদীপের স্থান নির্বাচন করা
প্রদীপ জ্বালানোর জন্য এমন জায়গা বেছে নিন, যেখানে শিশু বা পোষা প্রাণী সহজে হাত দিতে পারবে না। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে। প্রদীপ রাখার সময় অবশ্যই অগ্নিনিরোধী পাত্র ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে মাটির প্রদীপ বা ধাতব থালা সবচেয়ে নিরাপদ বিকল্প।এছাড়া খোলা জায়গায় বা বাতাসে হেলানো প্রদীপ থেকে সহজেই আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে, তাই এসব জায়গায় প্রদীপ না রাখাই ভালো।
২. বাড়তি সতর্কতা
প্রদীপ জ্বালানোর সময় মোমবাতি বা তেল ব্যবহার করলে অবশ্যই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। একসঙ্গে বেশি তেল বা মোম দিলে তা দ্রুত জ্বলে ওঠে, ফলে আগুন লাগার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই প্রদীপে ধীরে ধীরে তেল বা মোম পূর্ণ করুন।
এছাড়া প্রদীপের চারপাশে কাগজ, কাপড়, সুতি দড়ি কিংবা দাহ্য কোনো বস্তু রাখবেন না। এসব জিনিস আগুনের সংস্পর্শে এসে মুহূর্তেই জ্বলে উঠতে পারে। প্রদীপ রাখার স্থান যেন পরিষ্কার, শুকনো ও খোলা বাতাসে নিরাপদ দূরত্বে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৩. শিশু ও পোষা প্রাণী থেকে দূরে রাখুন
ছোট শিশুদের হাতে কখনোই প্রদীপ দেবেন না। আগুন তাদের কাছে কৌতূহলের বিষয় হলেও অল্প অসতর্কতায় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই প্রদীপ জ্বালানোর সময় শিশুদের কাছ থেকে দূরে রাখুন এবং সবসময় তাদের নজরে রাখুন।
একইভাবে পোষা প্রাণীও প্রদীপের কাছাকাছি যেতে পারে। লেজ নাড়ানো, কৌতূহলবশত ঘ্রাণ নেওয়া বা ধাক্কা দেওয়ার ফলে আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই প্রদীপ এমন জায়গায় রাখুন যেখানে তারা সহজে পৌঁছাতে না পারে।
৪. পানি ও অগ্নিনিরোধী সরঞ্জাম সঙ্গে রাখুন
প্রদীপ জ্বালানোর সময় সতর্কতার অংশ হিসেবে পানি বা বালতি পাশে রাখুন। এতে কোনো অঘটন ঘটলে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
৫. আতশবাজি নিরাপদে ব্যবহার
প্রদীপের সঙ্গে আতশবাজি জ্বালানোর আগে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। বাতাসে জ্বলে ওঠা আতশবাজি, রকেট বা ফোয়ারা যেন শিশুদের কাছাকাছি না থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখুন।
৬. প্রদীপ নিভিয়ে রাখা
উৎসব শেষ হলে প্রদীপ পুরোপুরি নিভিয়ে দিন। আগুন নেভানো না হলে রাতের বেলা দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। ধুলো, বালু বা পানি ব্যবহার করে প্রদীপ নিভিয়ে নিলে তা সবচেয়ে নিরাপদ হয়। এতে রাতের বেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
দীপাবলির আনন্দ এবং নিরাপত্তা একসঙ্গে মিলে গেলে উৎসব সত্যিই আনন্দময় হয়। সঠিক সাবধানতা, সতর্কতা এবং পরিকল্পনা নিয়ে উদযাপন করুন, যাতে আনন্দের সঙ্গে নিরাপত্তাও থাকে।
সূত্র: এনডিটিভি ও অন্যান্য
আরও পড়ুনতিন তালাকে কি বিবাহবিচ্ছেদ হয়ভুনা ও চচ্চড়ির পার্থক্য কী
এসএকেওয়াই/এএমপি/এএসএম