জাতীয়

অগ্নি-দুর্ঘটনা নিয়ে কোর কমিটিতে যারা আছেন, যেসব কাজ করবে কমিটি

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ অন্যান্য অগ্নিদুর্ঘটনার সুষ্ঠু ও দ্রুত তদন্তে কোর কমিটি গঠন করেছে সরকার। ১৬ সদস্যের কমিটির সভাপতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। বর্তমানে নাসিমুল গনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

গত ১৯ অক্টোবর আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভার কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে। যদিও ওই দিনই সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম (বীর প্রতীক) সাংবাদিকদের কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছিলেন।

সভার কার্যপত্রে কমিটির কার্যপরিধিও উল্লেখ করা হয়েছে।

কমিটির সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতিনিধি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিনিধি। এরা সবাই অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের।

এছাড়া সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি (ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পর্যায়ের), বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিনিধি (অতিরিক্ত আইজিপি), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতিনিধি (সদস্য পর্যায়ের), বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি (সদস্য পর্যায়ের), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি (সদস্য পর্যায়ের), বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা-১) কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি অগ্নিকাণ্ড ঘটার কারণ, দায়দায়িত্ব নিরূপণ করবে এবং অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে ঘাটতি নির্ধারণ করে কোর কমিটির কাছে প্রতিবেদন পাঠাবে। এ কমিটি অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে প্রয়োজনীয় সুপারিশমালা আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির কাছে পাঠাবে।

কোর কমিটি কেপিআইভুক্ত (গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা) প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা ঝুঁকি নিরূপণ এবং ঝুঁকি থেকে উত্তরণের উপায় নির্ধারণ সুপারিশ দেবে।

কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠানের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার কার্যকারিতা পরীক্ষা করে অগ্নিপ্রতিরোধে সুপারিশ করবে। এ কমিটি প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য অন্তর্ভুক্ত (কো-অপ্ট) করতে পারবে।

কোর কমিটি সুপারিশ আগামী ৫ নভেম্বর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সমন্বয় কমিটির অনুষ্ঠিতব্য সভায় উপস্থাপন করবে। কমিটি বিমানবন্দরসহ উল্লিখিত অগ্নিদুর্ঘটনা সমূহের সুষ্ঠু ও দ্রুত তদন্ত নিশ্চিত করবে। ক্ষেত্রবিশেষে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ নিয়োজিত করে পরামর্শ গ্রহণের বিষয়েও সুপারিশ দেবে। প্রয়োজনে কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন কেপিআই সরেজমিনে পরিদর্শন করতে পারবে।

সমন্বয় কমিটির বৈঠকে আরও যেসব সিদ্ধান্ত

সব মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে (কেপিআই) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সমন্বয় কমিটির কাছে নিয়মিত প্রতিবেদন পাঠাবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

উপদেষ্টা/মন্ত্রিপরিষদ সচিব/প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব/সিনিয়র সচিব/সচিব এবং উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে তাদের পরিদর্শনকালীন কেপিআইভুক্ত স্থাপনা পরিদর্শন করবে। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া ১০টি বড় শপিংমল এবং ১০টি বহুতল ভবন বা স্থাপনা নির্বাচন করে জনসমক্ষে তাদের অগ্নিনির্বাপণ সক্ষমতা নিরূপণ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভায়।

আরএমএম/এমআইএইচএস/জিকেএস