ধর্ম

ধর্ষণের ঘটনায় আত্মসমালোচনাও দরকার: মিজানুর রহমান আজহারী

সাম্প্রতিক সময়ে উত্থাপিত ধর্ষণের অভিযোগগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জনপ্রিয় আলেম ও ওয়ায়েজ ড. মিজানুর রহমান আজহারী। পাশাপাশি অপরাধীদের ধিক্কার দিয়ে দায় শেষ না করে মুসলমান বাবা-মা ও অভিভাবকদের আত্মসমালোচনা ও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, সম্প্রতি ফাঁদে ফেলে সংগঠিত ধর্ষণগুলো মুসলিম তরুণীদের জীবনের নিছক কোনো ট্র্যাজেডি নয় বরং আমাদের সামগ্রিক নৈতিক অবক্ষয়ের এক অশনিসংকেত। পাশাপাশি এটি দেশের স্থিতিশীলতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার এক অপচেষ্টা-ও বটে। যদি এটি কোনো অপশক্তির ষড়যন্ত্র হয়ে থাকে, তাহলে তা গোটা দেশ ও জাতির নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলার জন্য চরম এক হুমকি। প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতা আমাদের নাগরিক নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

মিজানুর রহমান আজহারি বলেন, এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে আমাদের আত্মসমালোচনাও দরকার—আমরা কি কেবল অপরাধীদের ধিক্কার দিয়েই দায় শেষ করছি? কেন আমাদের সন্তানরা এত সহজে প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে? অভিভাবকরা কি জানেন তাদের সন্তান কার সঙ্গে মিশছে, কী ধরনের চিন্তায় প্রভাবিত হচ্ছে কিংবা কোন ভার্চুয়াল জগতের গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে? একজন মুসলিম তরুণ বা তরুণী যদি সহজেই প্রলোভনে পড়ে ইমান ও নৈতিকতার সীমা লঙ্ঘন করে; তবে সেটা শুধু প্রলোভনকারীর দোষ নয়— বরং আমাদের পরিবার ও গোটা সমাজের ব্যর্থতাও বটে।

মুসলিম পারিবারিক জীবনে এখন আত্মনিয়ন্ত্রণ, মূল্যবোধ ও নৈতিকতার চর্চা চরম মাত্রায় অবহেলিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সন্তানদের আধুনিক শিক্ষা দিচ্ছি ঠিক-ই কিন্তু তাদের আত্মিক শক্তি, উন্নত চরিত্র ও ইমানি দৃঢ়তা গড়ে তুলতে পারছি না। উত্তর-আধুনিকতার এই কঠিন সময়ে, নৈতিকতার চর্চা ও পারিবারিক তারবিয়া ছাড়া কোথাও মুসলিম সমাজ নিরাপদ থাকতে পারবে না। তাই প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের পাশাপাশি সমাজের প্রতিটি পরিবারকেই হতে হবে ইমানী চেতনা ও নৈতিকতার অভেদ্য দুর্গ। এটাই আমাদের আত্মরক্ষার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।

ওএফএফ