দেশজুড়ে

স্থানীয়দের সতর্ক করতে কৃত্রিম ঘূর্ণিঝড় বানালেন স্বেচ্ছাসেবকরা

স্কুলমাঠে সাজানো হয়েছে ছোট্ট একটি গ্রাম। গ্রামবাসীর কেউ নামাজ পড়ছেন, কেউ যাচ্ছেন গরু নিয়ে মাঠে। অন্যদিকে বাজছে রাখালের বাঁশি, চলছে বিয়ের আয়োজন। ঠিক এমন সময় রেডিওতে বেজে উঠলো ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্কবার্তা। মুহূর্তের মধ্যেই শুরু হলো প্রবল ঝড়। উল্টে গেল ঘরের চাল, ভেঙে পড়লো গাছ। লন্ডভন্ড হলো গ্রাম।

উপকূলের মানুষকে ঘূর্ণিঝড়ের সময় সচেতন ও প্রস্তুত করতে বরগুনায় অভিনয়ের মাধ্যমে এই কৃত্রিম ঘূর্ণিঝড় মহড়ার আয়োজন করে উন্নয়ন সংস্থা জাগোনারী।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের লেমুয়া পি কে মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত এই মহড়াটি বাস্তবায়িত হয় জাগোনারীর ‘উইলি’ প্রকল্পের উদ্যোগে। এতে কারিগরি সহায়তা দেয় ‌‘কেয়ার বাংলাদেশ’। অর্থায়ন করে এএফডি।

আয়োজকরা জানান, দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীরা। তাই আগাম প্রস্তুতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই এই মহড়ার মূল লক্ষ্য ছিল। একইসঙ্গে এর মাধ্যমে এলাকাবাসীকে দুর্যোগের সময় করণীয় সম্পর্কে হাতে-কলমে ধারণা দেওয়া হয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আমাদের এলাকার একটি প্রতিনিয়তকার চিত্র। এরপরও অনেকেই সচেতন নয়। এই মহড়ার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করতে পেরে ভালো লাগছে। আমাদের আশা, উপকূলীয় মানুষ নিজেরাই যেন সবসময় প্রস্তুত থাকতে পারে।’

লেমুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়া বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় হলে আগে বুঝতাম না কী করতে হবে। আজকের মহড়া দেখে শিখেছি কখন আশ্রয়ে যাবো, কীভাবে নিরাপদে থাকতে হবে।’

মহড়া দেখতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা হোসেন মিয়া বলেন, ‘মনে হয়েছে যেন সত্যিকারের ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে। এটি আমাদের জন্য অনেক শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা। এখন থেকে আগাম সতর্কতা পেলেই আমরা প্রস্তুতি নেবো।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের সিপিপি ইউনিট লিডার গোলাম মোস্তফা, লেমুয়া পি কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ূন আহমেদ, ইটবাড়িয়া কদমতলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ বশির উদ্দিন, ইউপি সদস্য রুবি আক্তার, উইলি প্রকল্পের সমন্বয়ক শুক্লা মুখার্জ্জি এবং জাগোনারীর পরিচালক (কর্মসূচি) গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

নুরুল আহাদ অনিক/এসআর/জিকেএস