জন্মদিনে কেক, ফুল আর শুভেচ্ছায় ভেসে যাওয়ার কথা থাকলেও মাহিয়া মাহির দিনটা কেটেছে কান্নায় ভেজা চোখে। দূর দেশে থেকেও তার মন পড়ে ছিল একটিমাত্র জায়গায়-ছোট্ট ছেলে ফারিশের কাছে। নিউইয়র্কের আকাশে নিজের জন্মদিনের তারাগুলো দেখেও মাহির মনে হচ্ছিল, সব আলো যেন ছেলের ‘মা মা’ ডাকে মিলিয়ে যাচ্ছে।
সেই ছোট্ট ডাকে যে কত ভালোবাসা, কত টান, তা কেবল এক মা-ই বুঝতে পারেন। ফারিশ এবার আড়াই বছরের। প্রথমবারের মতো স্পষ্ট করে বলেছে, ‘হ্যাপি বার্থডে মা।’
রাকিব সরকার সেই মুহূর্তের ভিডিও শেয়ার করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে-ছেলেটি কেক কাটছে, হাসছে আর নিজের মিষ্টি স্বরে মাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। পর্দার ওপার থেকে ভিডিওটা দেখতে দেখতে মাহির চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। কান্না চেপে রাখতে পারেননি তিনি।
জন্মদিনের এই আবেগঘন মুহূর্তের পাশাপাশি মাহি নিউইয়র্কের বন্ধুদের সঙ্গে কেক কেটে কিছু আনন্দঘন ছবিও ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।
সেসব ছবির সঙ্গে লিখেছেন, ‘দূরে কোথাও গেলে সব সময় মনে হয় আমার একটা ঘর থাকুক, যেখানে ফিরে আসার পিছুটান থাকবে। সেখানে কেউ আমার জন্য অপেক্ষা করুক, আমার কিছু লাগবে কি না খবর রাখুক, মন খারাপ হলে পাশে বসুক, কেঁদো না, আমরা আছি তো বলুক…তোমরা আমার সেই ঘর, আপু, ভাইয়া…জীবন সুন্দর। আমি কিন্তু আসলেই চমকে গেছি।’
২০১২ সালে শাহীন সুমন পরিচালিত ‘ভালোবাসার রঙ’ ছবির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয় মাহির। বাপ্পী চৌধুরীর সঙ্গে জুটি বেঁধে প্রথম ছবিতেই জনপ্রিয়তা পান তিনি।
এরপর একে একে ‘অগ্নি’, ‘পোরামন’, ‘দেশা দ্য লিডার’-এর মতো ছবিতে নিজেকে প্রমাণ করেছেন ঢালিউডের অন্যতম শীর্ষ নায়িকা হিসেবে।
সর্বশেষ তাকে দেখা গেছে হিমেল আশরাফ পরিচালিত ‘রাজকুমার’ ছবিতে, যেখানে তিনি শাকিব খানের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেন।
ব্যক্তিজীবনে মাহির গল্পও কম রঙিন নয়।
সহ-অভিনেতা পারভেজ মাহমুদ অপুকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন ২০১৬ সালে, কিন্তু ২০২১ সালের জুনে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে।
একই বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি বিয়ে করেন গাজীপুরের ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক রাকিব সরকারকে।
২০২৩ সালের ২৮ মার্চ তাদের ঘরে আসে সবচেয়ে বড় উপহার ছেলে ফারিশ।
এরপরের বছর মাহি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, রাকিবের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবসান ঘটেছে। সে সময় দুজনকেই একসঙ্গে কোথাও দেখা যায়নি। কেউ জানত না রাকিব কোথায়, মাহিও তখন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে।
কিন্তু সম্প্রতি আচমকাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুজনেই প্রায় একই সময়ে একই ছবি পোস্ট করেন ছেলে ও পরিবারের সঙ্গে এক ফ্রেমে। মাহির ক্যাপশন ছিল, ‘মাশা আল্লাহ’।
তার এই পোস্ট ঘিরে নতুন করে জেগে ওঠে কৌতূহল। সবাই ভাবছিল, তবে কি সম্পর্কের বরফ গলেছে? পরে মাহি নিজেই জানান, রাগের মাথায় বিচ্ছেদের কথা বলেছিলেন তিনি। আসলে তাদের মধ্যে কোনো বিচ্ছেদই হয়নি শুধু কিছু দূরত্ব ছিল, যা সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে গেছে।
জেএস/