দেশজুড়ে

জুলাই সনদের স্বাক্ষ‌রিত ক‌পি নিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘জুলাই সনদে সব রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু সে স্বাক্ষরের কাগজটি যখন চূড়ান্তভাবে জমা দেওয়া হলো, তখন দেখা গেল বিএনপি যে পাতায় স্বাক্ষর করেছে সেটি নেই। সেখানে অন্য পাতা যুক্ত হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা সবাই ড. ইউনূসকে সম্মান করি। তিনি একজন গুণিজন। তার নেতৃত্বের সরকারে বিএনপি-সহ আন্দোলনরত সব দল সহযোগিতা করেছে। কিন্তু তার গঠিত কমিশনের মধ্যে থেকে এ ধরনের প্রতারণামূলক কাজ হবে এটা জনগণ প্রত্যাশা করেনি।’

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খোলাবাড়িয়া গ্রামে জন্মান্ধ আব্দুল গফুর মল্লিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘জাতীয় জুলাই সনদে ৪৭ থেকে ৪৮টি ধারা রয়েছে। এর মধ্যে যে ধারাটি আইনিকরণ করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। আমরা আশা করছি, সরকার এবং এর সঙ্গে যারা কাজ করছেন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলো তারা জনগণের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমল থেকে এখন হয়তো আমরা কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করছি। কিন্তু সামগ্রিক স্বাধীনতার বিষয়টি নির্ভর করছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর। সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা, কোনো কারিগরি হবে কিনা বা কোনো ইঞ্জিনিয়ারিং হবে কিনা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনাও রয়েছে।’

রিজভী আরও বলেন, ‘আমরা বিএনপি পরিবার, যা তারেক রহমান সৃষ্টি করেছেন। সারা বাংলাদেশে আমরা ঘুরছি এবং একটি রাজনৈতিক দলের সামাজিক দায়িত্ব হিসেবেও কাজ করার চেষ্টা করছি। অনলাইনের মাধ্যমে জন্মান্ধ গফুরের কথা জানতে পারেন তারেক রহমান। তার নির্দেশে আজ রাজবাড়ীর প্রত্যন্ত অঞ্চলের জন্মান্ধ গফুর মল্লিকের বাড়িতে আমরা বিএনপি পরিবার এসেছি। গফুরকে তারেক রহমান ও তার শাশুড়ি কিছু সহযোগিতা করেছেন, যাতে তিনি একটি ঘর তৈরি করে তার ব্যবসার পরিধি বাড়াতে পারেন। এজন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহযোগিতা নিয়ে আমরা তার কাছে এসেছি।’

এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশে আজ রাজবাড়ীর জন্মান্ধ আব্দুল গফুর মল্লিকের বাড়িতে গেছেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্যরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্যসচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সংগঠনটির উপদেষ্টা ও সদস্যবৃন্দ, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব কামরুল আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আসলাম মিয়া, সাবেক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ, পাঁচুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মজিবর রহমান রতন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান লিখন, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম রোমানসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।এ সময় তারা জন্মান্ধ, নিঃসন্তান গফুর-নুরজাহান দম্পতির সার্বিক খোঁজখবর নেন এবং ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহের জন্য আর্থিক সহায়তা হিসেবে নগদ এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা তুলে দেন গফুর মল্লিকের হাতে।

জন্মান্ধ গফুর মল্লিক বলেন, ‘আল্লাহ রহমত দিয়েছেন বলেই আজ তারেক জিয়া আমার জন্য টাকা পাঠিয়েছেন। এটা আমার সৌভাগ্য। আমি চাই, ধানের শীষ নিয়ে উনি যেন বিজয়ী হন। আমি গাড়িতে নাড়ু বিক্রি করছিলাম, হয়তো সেই ভিডিও দেখে উনি আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই টাকার মধ্যে থেকে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে কিছু মালামাল কিনবো, আর দেড় লাখ টাকা জমি রাখবো।’

জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘জীবনের শেষ প্রান্তে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে অন্ধ গফুর’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নজরে আসে। পরে তিনি ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনকে আব্দুল গফুর মল্লিকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশ দেন। 

রুবেলুর রহমান/আরএইচ/জিকেএস