ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ অঞ্চলে পরিণত হয়েছে গাজা। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় অন্তত ২৪৮ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। যুদ্ধের ইতিহাসে যা অন্য যেকোনো সংঘাতের তুলনায় সবচেয়ে বেশি।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্তেফান দুজারিক আসন্ন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধে দায়মুক্তি অবসানের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সাংবাদিক হত্যার প্রায় ৯০ শতাংশই আজও অমীমাংসিত থেকে গেছে। গাজা এখন যেকোনো সংঘাতের মধ্যে সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে প্রাণঘাতী স্থান।
দুজারিক আরও বলেন, যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ করা হয় তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারিয়ে ফেলি।
তিনি জানান, মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। গুতেরেসের মতে, দায়মুক্তি সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ওপর আঘাত এবং গণতন্ত্রের জন্য সরাসরি হুমকি।
গাজার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে দুজারিক জানান, নতুন করে ইসরায়েলি বিমান হামলার খবর পাওয়া সত্ত্বেও মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী এসব হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে সামরিক অভিযানের সময় বেসামরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থার ভয়াবহ অবনতি সম্পর্কে দুজারিক বলেন , গাজার স্বাস্থ্যখাত এখন বিপর্যয়ের মুখে। জনগণের বিপুল চাহিদা মেটাতে তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। ২০২৩ সালে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ বছরের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত অন্তত ১,৭০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) এর তথ্য মধ্যে, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে ২২৪ জনের বেশি মানবাধিকার কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা অনুযায়ী অস্ত্রবিরতি চলছে। তবে ইসরায়েল একাধিকবার ওই চুক্তি ভঙ্গ করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৬৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে দেড় লাখের বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক। ইউনিসেফের তথ্য মতে, এ যুদ্ধে ২০ হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ৪২ হাজারের বেশি শিশু যাদের মধ্যে অন্তত ২১ হাজার শিশু স্থায়ীভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটরকেএম