অর্থনীতি

এক বছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে ৭ বিলিয়ন ডলার

রেমিট্যান্স প্রবাহের ইতিবাচক ধারায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও বড় উত্থান দেখা দিয়েছে। চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ বিলিয়ন ডলারের ওপরে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী এ সময়ে রিজার্ভ ছাড়িয়েছে ২৭ বিলিয়ন ডলার।

তুলনামূলকভাবে, গত বছরের একই সময়ে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। সে হিসাবে এক বছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে ৭ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, গত বছরের একই সময়ে বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ১৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

রোববার (২ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সদ্য প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২.১৪ বিলিয়ন ডলার, অন্যদিকে বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ২৭.৫৪ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফকে দেওয়া পৃথক তথ্য অনুযায়ী, দেশের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর দেশের গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৫.৪৪ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ১৯.৮৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, এক বছরে গ্রস রিজার্ভ বেড়েছে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী বেড়েছে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার।

বিশ্বব্যাপী প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, একটি দেশকে ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ হিসেবে ধরে রাখতে হয়। সেদিক থেকে বাংলাদেশ এখন এই সীমার শেষ প্রান্তে অবস্থান করছে।

রিজার্ভ বাড়ার পেছনে বিশেষজ্ঞরা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রবাসীদের বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বৃদ্ধিকে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। যার ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি না করে বরং বাজার থেকে ডলার কিনেছে।

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহ ধারাবাহিকভাবে ইতিবাচক ছিল। যেখানে জুলাইয়ে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ডলার, আগস্টে ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার এবং সদ্যবিদায়ী অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছে ২৫৬ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের।

এর আগে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চে রেমিট্যান্স এসেছিল সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলার, যা ওই বছরের একক কোনো মাস হিসেবে ছিল সর্বোচ্চ। পুরো ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আসে ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬.৮ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৩ সালের জুনে দেশের রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৫.৩২ বিলিয়ন ডলার। এরপর ধাপে ধাপে তা বেড়ে ২০২১ সালের আগস্টে রেকর্ড ৪৮.০৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। ২০২২ থেকে ডলার সংকটে রিজার্ভ কমতে শুরু করে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩১ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে তা দাঁড়ায় ৩১.৬৮ বিলিয়ন ডলারে।

ইএআর/এমকেআর/জিকেএস