যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউনের জেরে প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে ১০ শতাংশ ফ্লাইট কমানোর নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মার্কিন পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি বুধবার (৫ নভেম্বর) বলেছেন, ‘নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে’ যুক্তরাষ্ট্রের ৪০টি প্রধান বিমানবন্দরে ফ্লাইট ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হবে। দেশটির ইতিহাসে দীর্ঘতম ৩৬ দিনের সরকারি কার্যক্রম বন্ধের (শাটডাউন) ফলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই আকস্মিক ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এয়ারলাইনগুলোর মধ্যে হইচই পড়ে গেছে। মাত্র ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হাজারও ফ্লাইট বাতিল বা সময়সূচি পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়েছে। যাত্রীরা এয়ারলাইনগুলোর হেল্পলাইনে যোগাযোগ করে ভ্রমণ নিয়ে উদ্বেগ জানাচ্ছেন।
ডাফি জানান, যদি ডেমোক্র্যাটরা সরকার ফের চালুর বিষয়ে রাজি হয়, তাহলে এই কাটছাঁট প্রত্যাহার করা যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউনের কারণে ১ এক লাখ ৩০ হাজার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে বেতন ছাড়াই কাজ করতে হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এভাবে প্লেন চলাচল অব্যাহত রাখা বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।
ফেডারেল এভিয়েশন প্রশাসন (এফএএ) জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যে ধাপে ধাপে ফ্লাইট কমানো হবে—প্রথমে ৪ শতাংশ, এরপর ৫, ৬, এবং সবশেষে ১০ শতাংশ পর্যন্ত। তবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো এ সিদ্ধান্তের বাইরে থাকবে।
এই পদক্ষেপে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলেস, আটলান্টা ও ডালাসের মতো বড় শহরের বিমানবন্দরগুলোতে। বিশ্লেষকদের হিসাবে, এতে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ৮০০ ফ্লাইট এবং দুই লাখের বেশি যাত্রী আসন কমে যাবে।
এফএএ কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে আকাশপথের নিরাপত্তা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। এখনই পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
এয়ারলাইনগুলো ইতিমধ্যে পরিস্থিতি মূল্যায়ন শুরু করেছে। ইউনাইটেড এয়ারলাইনস জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ও প্রধান রুটের ফ্লাইট বজায় রাখা হবে, তবে অভ্যন্তরীণ ও ছোট রুটে কাটছাঁট করা হবে। যাত্রীদের জন্য ফ্লেক্সিবল রিফান্ড সুবিধাও থাকবে।
সাউথওয়েস্ট ও আমেরিকান এয়ারলাইনস জানিয়েছে, তারা সময়সূচি পুনর্গঠনের কাজ করছে এবং যাত্রীদের দ্রুত জানানো হবে।
ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে বলেছে, এই শাটডাউন পুরো যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের ওপর এক নিষ্ঠুর আঘাত।
শাটডাউনের কারণে ইতোমধ্যে একাধিক সরকারি সেবা বন্ধ হয়ে গেছে, প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার ফেডারেল কর্মী ছুটিতে আছেন এবং নিম্ন আয়ের মানুষ খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন না।
ডাফি সতর্ক করে বলেছেন, যদি শাটডাউন আরও এক সপ্তাহ চলে, তাহলে আকাশপথে ‘বিপর্যয়কর বিশৃঙ্খলা’ দেখা দিতে পারে এবং কিছু আকাশসীমা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হতে পারে।
বুধবার একদিনেই যুক্তরাষ্ট্রে ২ হাজার ১০০র বেশি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্সকেএএ/