লাইফস্টাইল

শরীরের এক নীরব টিউমার থেকে হতে পারে নেট ক্যানসার

শরীরের অনেক রোগের মতো নেট (এনইটি) ক্যানসার বা নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমার প্রথমদিকে কোনো লক্ষণ ছাড়াই গোপনে বাড়তে থাকে আমাদের শরীরে।

এই ক্যানসার তৈরি হয় এমন কোষ থেকে, যেগুলো একদিকে হরমোন তৈরি করে আবার অন্যদিকে স্নায়ুর মতো কাজ করে। এই কোষগুলো আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ছড়িয়ে আছে — বিশেষ করে ফুসফুস, অগ্ন্যাশয়, অন্ত্র ও থাইরয়েড গ্রন্থিতে।

চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, নেট ক্যানসার দ্রুত বাড়ে না, বরং ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। এজন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়া কঠিন। তবে কিছু ক্ষেত্রে শরীরে হরমোনের মাত্রা বেড়ে গিয়ে বিশেষ কিছু উপসর্গ দেখা দেয় — যেমন মুখ লাল হয়ে যাওয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট বা অজানা কারণে ঘাম হওয়া। এই অবস্থাকে বলা হয় ‘কারসিনয়েড সিনড্রোম’। অনেক সময় এই উপসর্গগুলো অন্য রোগের সঙ্গে মিশে যায়, ফলে সঠিক চিকিৎসা পেতে দেরি হয়ে যেতে পারে।

প্রতি বছর নভেম্বর মাসে পালিত হয় ‘নেট ক্যানসার অ্যাওয়ারনেস মান্থ’, যার লক্ষ্য - এই জটিল কিন্তু অবহেলিত ক্যানসার সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। কারণ, সময়মতো ধরা পড়লে ও চিকিৎসা শুরু করলে নেট ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রথমে নির্ণয় করা হয় টিউমারটি কোথায় তৈরি হয়েছে এবং কতটা ছড়িয়েছে। এজন্য রক্ত ও মূত্র পরীক্ষায় হরমোনের মাত্রা যাচাই করা হয়, সিটি স্ক্যান বা এমআরআই, এবং প্রয়োজনে পিইটি স্ক্যান। চিকিৎসা নির্ভর করে অবস্থার ওপর — কারও ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারই যথেষ্ট, আবার কারও ক্ষেত্রে প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয় টার্গেটেড থেরাপি, কেমোথেরাপি বা ‘পেপটাইড রিসেপ্টর রেডিওনিউক্লাইড থেরাপি’ (পিআরআরটি)।

তাই বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন - অজানা হরমোনজনিত সমস্যা বা দীর্ঘদিনের পাচনতন্ত্রের জটিলতা থাকলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি। কারণ, শরীরের অনেক ক্যানসারের মতো নেট ক্যানসারও নীরবে বাড়ে, তবে সচেতনতা ও সময়মতো পদক্ষেপ নিলে এটি মোকাবেলা করা যায়।

সূত্র: আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি, ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট, মায়ো ক্লিনিক, জনস হপকিন্স মেডিসিন, ইউরোপিয়ান নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমার সোসাইটি

এএমপি/এমএস