অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক ঋণ অনুমোদন করে ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে মামলাগুলো করা হয় বলে সংস্থার উপ-পরিচালক মশিউর রহমান জানিয়েছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন সাইফুজ্জামানের স্ত্রী ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) পিএলসির সাবেক চেয়ারম্যান রুকমিলা জামান, ইউসিবিএল ও ইউসিবি পিএলসির নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং সাবেক পরিচালক বশির আহমেদ, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক পরিচালক আনিসুজ্জামান চৌধুরী, ব্যাংকের চট্টগ্রাম পোর্ট শাখার এভিপি ও অপারেশন ম্যানেজার মো. আব্দুল আউয়াল, এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. আবু বকর খান, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার জামাল উদ্দিন, এভিপি জিয়াউল করিম খান এবং ভিপি ও শাখাপ্রধান মো. জাহিদ হায়দার।
একই সঙ্গে ইউসিবিএল ও ইউসিবি পিএলসির নির্বাহী কমিটির সাবেক পরিচালক বজল আহমেদ বাবুল (সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান), এম এ সবুর, ইউনুছ আহমদ, নুরুল ইসলাম চৌধুরী ও আসিফুজ্জামান চৌধুরীর নাম আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এছাড়া আরামিট পিএলসি সংশ্লিষ্ট দুই ব্যবসায়ী মডেল ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মিছাবাহুল আলম এবং ক্লাসিক ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী ও এজিএম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের নাম রয়েছে মামলায়। পাশাপাশি আলোক ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার বিশ্বাস, বিঅ্যান্ডবি ইলেকট্রনিক্সের কর্মচারী মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ও দিদারুল আলমকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুনফারইস্টের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ খালেকের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরঅগ্রণী ব্যাংকের ২২ কোটি টাকা আত্মসাৎ, সাবেক দুই এমডির নামে মামলাবেনজীরের সম্পদের খোঁজে ৩ দেশের সহায়তা চাইলো দুদক
মামলাগুলোর অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বশির আহমেদের প্রতিষ্ঠান বিঅ্যান্ডবি ইলেকট্রনিক্সের কর্মচারী মোস্তাফিজুর রহমান ও সিন্ডিকেট সদস্য মো. আবুল কালামের সহায়তায় কৌশলে গ্রামের সহজ-সরল কৃষক ও খণ্ডকালীন শ্রমিক নুরুল বশর, মোহাম্মদ আয়ুব, মো. ইউনুছ ও মো. ফরিদুল আলমের ব্যক্তিগত তথ্য (এনআইডি, ছবি ইত্যাদি) সংগ্রহ করে ব্যাংক কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে এসব ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক হিসাব খুলে ঋণ অনুমোদন করানো হয়। পরবর্তীতে অনুমোদিত ঋণের ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়।
এসব ঘটনার মধ্যে আট কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের উপ-পরিচালক মশিউর রহমান বাদী হয়ে প্রথম মামলা করেন। আর নয় কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মাইনুদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে দ্বিতীয় মামলা করেন।
পাঁচ কোটি ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. সজীব আহমেদ বাদী হয়ে তৃতীয় মামলা করেন। এছাড়া আট কোটি ৫০ লাখ ২৯ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. রুবেল হোসেন বাদী হয়ে চতুর্থ মামলা করেন।
এসএম/একিউএফ/এমএস