আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের আরও ১২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে আজ সংলাপ শুরুর আগে ইসলামী ঐক্যজোটের দুই গ্রুপের হট্টগোলের কারণে বের হয়ে যেতে বলেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
জানা গেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচবন কমিশন (ইসি)। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংলাপ শুরু হয়। ইসলামী ঐক্যজোটের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হাসানাত আমিনীর অনুসারীরা আজ রোববার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপে যোগ দিতে যান। কিন্তু সংলাপ শুরুর আগে দলটির বর্তমান অংশের লোকজন আপত্তি তোলেন।
ইসলামী ঐক্যজোটের দুই পক্ষের প্রতিনিধি আসায় হট্টগোল হয়। সংলাপে অংশ নিতে আসা যাদের কাছে চিঠি নেই তাদের সম্মেলন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা বলেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
সংলাপে অংশ নিতে দলটির যুগ্মমহাসচিব দাবি করা মইনুদ্দিন রুহিসহ তিন সদস্যের প্রতিনিধি আগেই চেয়ারে বসেন। পরে দলটির আরেক পক্ষের মাওলানা জোবায়েরসহ একটি প্রতিনিধি সংলাপের কক্ষে প্রবেশ করেন, যাদের কাছে ইসি থেকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্র রয়েছে। তখন কিছুটা হট্টগোল হয়। এসময় ইসি সচিব তাদের যাদের কাছে চিঠি নেই তাদের সম্মেলন কক্ষ থেকে বের হয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানান।
সম্মেলন কক্ষ থেকে বের হওয়া অংশ থেকে মইনুদ্দিন রুহি বলেন, আমাদের চিঠিটা ব্ল্যাকমেইল করে ওনারা উঠিয়ে নিয়েছেন। কমিশন চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দিয়েছে। চেয়ারম্যান যাদের প্রতিনিধি নির্ণয় করেছেন, তারা আসবেন না? চেয়ারম্যান আমাদের চিঠি দিয়ে, প্যাডের মধ্যে লিখে দিয়েছেন। ওনারা (ইসি) বলছেন চিঠি যার কাছে তারা বসবেন। এটি একটি কথা হলো। বাইরের লোকের কাছে চিঠি থাকতে পারে? চিঠিটা ডাকে পাঠিয়ে, যে কেউ চিঠিটা উঠাইতে পারেন। চিঠি যার কাছে থাকবে, সেই কি ইসলামী ঐক্যজোটের প্রতিনিধি হবে? প্রশ্ন রাখেন তিনি।
সংলাপে চলমান থাকায় ইসলামী ঐক্যজোটের আরেক পক্ষের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। চেয়ারম্যান ও মহাসচিব স্বাক্ষর করে আমাদের তিনজনকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছেন বলেন তিনি।
ইসলামী ঐক্যজোটের এক পক্ষ সম্মেলন কক্ষ ত্যাগ করলে ইসি সচিব বলেন, আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত অসামঞ্জস্যতা দিয়ে শুরু করার জন্য। তিতা দিয়ে শুরু করলে নাকি ভালো হয়।
সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, দলগুলোর সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আমরা যাতে সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন করতে পারি। লেভেল প্লেইং ফিল্ড সমান রাখতে পারি। সে জন্য আপনাদের পরামর্শ চাই।
আচরণবিধি প্রতিপালনের ওপর সুন্দর নির্বাচন নির্ভর করে সিইসি বলেন, আপনারা নিজেরা পড়বেন। আমরা তো আচরণবিধি প্রতিপালনের জন্য প্রচারণ করবোই। আপনারাও দলীয়ভাবে যদি প্রচারণার ব্যবস্থা করেন, আপনাদের কর্মীদের যদি বলেন যে, এই আচরণবিধি আমাদের ফলো করতে হবে। তাহলে আমাদের জন্য একটু সুবিধা হয়।
আজ সকালে গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি এবং দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাপ, তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপ করবে।
এমওএস/এসএনআর/জেআইএম