চুয়াডাঙ্গায় আগেভাগেই অনুভূত হয় শীত। ব্যতিক্রম হয়নি এবারও। শীত জেঁকে বসার আগেই লেপ-তোশক বিক্রির ধুম পড়েছে। এগুলো তৈরি ও বিক্রির দোকানগুলোতে বেড়েছে ক্রেতার উপস্থিতি। কেউ পুরোনো লেপ নতুন করে বানিয়ে নিচ্ছেন, আবার কেউবা নতুন করে লেপ, তোশক কিনছেন। ফলে ব্যস্ত সময় কাটছে কারিগরদের।
কারিগররা বলছেন, তুলা, ঝুট, ছোবড়া, কাপড় সব উপকরণের দাম বাড়ায় লেপ, তোশক তৈরি করতে অতিরিক্ত ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। কেননা গত বছরের তুলনায় এবার খরচ অনেক বেশি, কিন্তু আয় তেমন বাড়েনি।
চুয়াডাঙ্গা শহরের লেপ-তোশক কারিগর ও দোকান মালিক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন ৪-৫টি লেপ এবং তিনটি তোশক তৈরি করতে পারি। এবছর মনে হচ্ছে ক্রেতা একটু বেশি। তবে জিনিসের দাম অনেক বেড়েছে। তাই মজুরিও কিছুটা বাড়াতে হচ্ছে।’
আলমডাঙ্গার নুরজাহান বেডিং হাউজের বিক্রেতা মোহাম্মদ শাওন জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘এবছর তুলা, ঝুট, কাপড়ের দাম আগের তুলনায় বেশি। আমরা আগের মতো কম দামে লেপ দিতে চাই, কিন্তু সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না। শীতটা আরেকটু বাড়লে বেচাকেনাও আরও বাড়বে বলে আশা করছি।’
যখন চুয়াডাঙ্গা শহরে লেপ-তোশকের বাজার জমে উঠেছে, তখন আলমডাঙ্গার চিত্র ভিন্ন। বেচাকেনা তুলনামূলক কম।
আলমডাঙ্গার আলাউদ্দিন বেডিং হাউজের মালিক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘গতবছরের তুলনায় এবার আলমডাঙ্গায় বেচাকেনা তেমন বাড়েনি। শীতের আমেজও পুরোপুরি আসেনি বলা যায়।’
কারিগর মোহাম্মদ ওয়াসিম বলেন, ‘তুলা-ছোবড়া সবকিছুর দামই বাড়ছে কিন্তু আমাদের মজুরি বাড়ছে না। প্রতিদিন পাঁচটি পর্যন্ত লেপ-তোশক বানাই। জাজিমের মজুরি ৩০০ টাকা, সিঙ্গেল তোশক ৬০ টাকা, ডাবল তোশক ১২০ টাকা এবং আকারভেদে লেপের মজুরি ২০০-৩০০ টাকা। জিনিসের দাম বাড়লে আমাদের ওপরই চাপ পড়ে বেশি।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গার সহকারী পরিচালক মামুনুল হাসান বলেন, ‘শীত মৌসুম সামনে রেখে লেপ-তোশকসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। এসময় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত লাভের আশায় পণ্যের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করেন। লেপ-তোশক বিক্রিতে যেন কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে মূল্যবৃদ্ধি বা প্রতারণা না করতে পারেন, সেজন্য আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করবো।’
হুসাইন মালিক/এসআর/এএসএম