বাংলাদেশ ভূমিকম্পের বিপদজ্জনক অঞ্চলে অবস্থিত। ভূমিকম্পের সময় অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং বিশেষ করে শিশুরা প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্ত হতে পারে।
চিকিৎসাশাস্ত্রের ভাষায়, প্রচণ্ড ভয়ে শরীরের মধ্যে যে অস্বাভাবিক অবস্থা তৈরি হয়, তাকেই প্যানিক অ্যাটাক বলা হয়। পরবর্তীতে এটি বিভিন্ন মানসিক ও শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
ভূমিকম্পের সময় বা পরে শিশুরা যদি প্যানিক অ্যাটাকে পড়ে, তাদের শান্ত করতে এবং সুরক্ষিত রাখতে অভিভাবকরা পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করতে পারেন।
১. শিশুর সঙ্গে শান্ত ও মৃদু স্বরে কথা বলুনশিশুর প্যানিক অ্যাটাকের সময় প্রথমেই নিজেকে শান্ত রাখুন এবং নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখুন। শিশুর সঙ্গে শান্ত ও মৃদু স্বরে কথা বলুন। শিশুকে জানান যে সে একা নয় এবং আপনারা সবসময় তার পাশে আছেন। এতে শিশুর ভয় ও বিচলিত হওয়ার মাত্রা কমে।
২. আলিঙ্গন করুন ও ভরসা দিনশিশুর প্যানিক অ্যাটাকের সময় প্রথমেই নিজেকে শান্ত রাখুন এবং নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখুন। শিশুর সঙ্গে শান্ত ও মৃদু স্বরে কথা বলুন, যাতে সে আশ্বস্ত বোধ করে। এরপর শিশুকে শক্তভাবে আলিঙ্গন করুন; শারীরিক স্পর্শ তাদের নিরাপত্তার অনুভূতি দেয় এবং ভয় কমাতে সাহায্য করে। নিশ্চিত করুন যে তারা সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ এবং আপনি সবসময় তাদের পাশে আছেন।
৩. নিঃশ্বাসে মনোযোগ দিনশিশুকে ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নিতে এবং ছাড়তে উৎসাহিত করুন। আপনার সঙ্গে একসঙ্গে শ্বাস-প্রশ্বাসের নিতে বলুন। এটি তার স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করতে সাহায্য করবে। চোখ ও শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক আছে কিনা নজর রাখুন। জোর করে কথা বলানোর চেষ্টা করবেন না, কারণ শিশুটি শক অবস্থায় রয়েছে।
৪. মনোযোগ অন্য দিকে সরিয়ে নিনশিশুর মনোযোগ ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে অন্য কোনো শান্ত কার্যকলাপে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। তাদের প্রিয় খেলনা, বই বা কোনো শান্ত ও পরিচিত কার্যকলাপে ব্যস্ত রাখার মাধ্যমে ভয় কমানো যেতে পারে।
৫. পানি পান করানোশিশুকে পর্যাপ্ত পানি বা জুস পান করতে দিন। এটি তাদের শারীরিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং অস্থিরতা কিছুটা কমাতে পারে। তবে জোর করে পানি পান করাবেন না; শিশুটি চাইলে তবেই পান করান।
৬. ডাক্তারের সাহায্য নিনযদি শিশুর কথা বলার প্রতি সাড়া না দেয় বা এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখায়, তখন তাকে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার বা হাসপাতালে নিয়ে যান। এটি ভূমিকম্পজনিত ট্রমা, যা দ্রুত সমর্থন পেলে ঠিক হয়ে যায়।
যদি শিশুর ভয় দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সমস্যা হয়, তবে একজন মনোবিজ্ঞানী বা মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
সূত্র: ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট, মহিলা ও শিশু কল্যাণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ও অন্যান্য আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে আটকে পড়লে কী করবেনআমরা কীভাবে সহনশীল হতে পারি?
এসএকেওয়াই/এমএস