দেশজুড়ে

একই রাস্তায় ৫ প্রকল্পের বরাদ্দ এলেও প্রমাণ নেই কাজের

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে টিআর, কাবিটা ও কাবিখা প্রকল্পের বরাদ্দ দেখিয়ে একই রাস্তায় বারবার প্রকল্প অনুমোদন নেওয়া হলেও কাজ না করা এবং সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। নয়ারহাট ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল সাত্তারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দি‌য়েছেন।

জানা গে‌ছে, গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি (কাবিটা-কাবিখা) থেকে গত তিন অর্থবছরে পাঁচটি প্রকল্পে মোট সাত লাখ ১২ হাজার টাকা ও পাঁচ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একই রাস্তার নামে ভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে বরাদ্দ নেওয়া হলেও মাঠপর্যায়ে কাজ হয়নি।

খোঁজ নি‌য়ে দেখা গে‌ছে, নয়ারহাট ইউনিয়নের ফেইচকার চর এলাকায় রহিমের স’মিল থেকে সাহেব আলীর ভিটা পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এক লাখ ৫২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে একই রাস্তার নাম পরিবর্তন করে আবারও দুই লাখ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ নেওয়া হয়।

একইভাবে ওই এলাকার মন্ডলের দোকান থেকে জাহাঙ্গীরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরবর্তী অর্থবছর ২০২৪-২৫ এ একই রাস্তার জন্য পাঁচ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেখানো হয়। অথচ এসব রাস্তার কাজের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি পাওয়া যায়নি।

এছাড়া ওই ইউপি সদস্য আব্দুল সাত্তার মগরাকুরা আকন্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই লাখ টাকা বরাদ্দ নি‌লেও তার কো‌নো কাজ ক‌রে‌নি ব‌লেও গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গে‌ছে।

স্থানীয় জিয়াউর রহমান জিয়া, শাহ আলম, সাহেব আলী, আব্দুল আজিজ মোল্লাহ, জহুরুল ইসলামসহ অনেকে বলেন, ইউপি সদস্য আব্দুল সাত্তার বারবার একই রাস্তার প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি অর্থ তুলে আত্মসাৎ করেছেন। কিন্তু রাস্তা এখনও আগের মতোই ভাঙাচোরা। কোনো উন্নয়ন হয়নি। বারবার বরাদ্দ পেলেও বাস্তবায়নের নামে শুধু কাগজে-কলমে কাজ দেখানো হয়েছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য আব্দুল সাত্তার বলেন, রাস্তাগুলোর কাজ আমি করেছি। মগরাকুরা সরকারি বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের কাজে আমাকে ৩০ ট্রাক মাটি কাটতে বলা হয়েছিল। আমি ৫৯ ট্রাক মাটি কাটায় কর্মকর্তারা আমাকে বকাঝকা করে কম বিল দিয়েছেন। এতে আমারই সাড়ে ১২ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সোহেল রহমান জানান, আমি যোগদানের পর একটি প্রকল্পের কাজ দিয়েছি। সেটির কাজ বুঝে নিয়ে বিল প্রদান করা হয়েছে।

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুজ কুমার বসাক বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রোকনুজ্জামান মানু/এফএ/জেআইএম