আন্তর্জাতিক ইনকামিং কলের টার্মিনেশন রেট ও রেভিনিউ শেয়ার বেআইনিভাবে কমিয়ে রাষ্ট্রের ৯ হাজার ১০ কোটি টাকা ক্ষতির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার ও বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হকের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক। এ মামলায় বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোসসহ সংস্থাটির ৫ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আসামি করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে মামলা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম।
দুদকের ইতিহাসে এই প্রথম সংস্থাটির কমিশনার পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা অনুমোদন করা হলো।
মামলায় যাদের আসামি করা হচ্ছে তারা হলেন- বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, সাবেক চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, দুদকের সাবেক কমিশনার ও সাবেক বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক, সাবেক বিটিআরসি কমিশনার মো. রেজাউল কাদের ও মো. আমিনুল হাসান।
আরও পড়ুনএকীভূত ৫ ব্যাংকের শাখা ‘গ্রাহকশূন্য’, সরকারের অর্থছাড়ের অপেক্ষা জয়-আনিসুল-সালমান-পলকের তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের হাতে
অনুমোদিত মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বিটিআরসি সরকারের অনুমোদন ছাড়াই পরীক্ষামূলক সময়ের কল রেট কমিয়ে শূন্য দশমিক শূন্য ৩ ডলার থেকে শূন্য দশমিক শূন্য ১৫ ডলার করে। এতে সরকারের রেভিনিউ শেয়ার ৫১ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে নামিয়ে আনে। একই সঙ্গে আইজিডব্লিউ অপারেটরের শেয়ার ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করা হয়, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। যার মাধ্যমে রেভিনিউ শেয়ার কমানোর ক্ষতি ৩৮৩ কোটি ৭৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। এছাড়া কম রেটে কল আনায় ক্ষতি ২ হাজার ৯৪১ কোটি ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা না আনায় ক্ষতি ৫ হাজার ৬৮৫ কোটি ১ লাখ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে রাষ্ট্রের মোট ক্ষতি ৯ হাজার ১০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪০৯/৪১৮, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হচ্ছে। পাশাপাশি অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে সংস্থাটির সাবেক কমিশনার মো. জহুরুল হকের বিরুদ্ধে পৃথক অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।
২০২১ সালের ১০ মার্চ কমিশনার হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশনে যোগদান করেন মো. জহুরুল হক। ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর পদত্যাগ করেন। ওইদিন দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও কমিশনার আছিয়া খাতুনও পদত্যাগ করেন।
এসএম/কেএসআর