দিনাজপুর শহরের কালিতলা থানার মোড় সংলগ্ন (কোতয়ালি থানার সামনে) এইচকে মাদার কেয়ার হসপিটালের চেয়ারম্যান ডা. হযরত আলী পাথর অপারেশন করতে গিয়ে এক নারীর কিডনি কেটে ফেলেছেন। জানতে পেরে মহিলার ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয়রা শোকাতর হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন তারা। পাথর অপারেশন করার সময় কিডনি কেটে ফেলার বিষয়টি টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে।ইতোপূর্বে ডা. হযরত আলী একটি অবৈধ গর্ভপাত মামলায় ৯ বছরের সাজা হয় এবং এক বছর জেল খেটে উচ্চ আদালত থেকে মুক্ত হয়। হাসপাতাল ও রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার পাকুড়া গ্রামের আঃ কুদ্দুসের স্ত্রী আনোয়ারার বাম পাশের কিডনির উপরে একটি পাথর হয়। এক্স-রে করে আরো নিশ্চিত হয় তার কিডনিতে কোনো সমস্যা নাই। গত ২৯ জুন রোগী আনোয়ারা ভর্তি হয় ডা. হযরত আলীর এইচকে মাদার কেয়ার হসপিটালে। পরের দিন ৩০ জুন ডা. হযরত আলী নিজেই এই পাথর অপারেশন করেন। পাথর অপারেশন করতে গিয়ে ভুলবশত কিডনিটি কেটে ফেলে। পাথর ও কিডনি দুটোই কেটে ফেললেও ডা. হযরত আলী কিডনি কেটে ফেলার বিষয়টি রোগীর লোকজনকে জানাননি। পরের দিন অপারেশন থিয়েটারে কিডনি কেটে ফেলার বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। গত শুক্রবার রাতে বিষয়টি জানতে পরে সাংবাদিকরা ওই হসপিটালে গেলে ডাক্তার হযরত সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান। ৫ তলায় ৬১৭ নং বেডে ভর্তি থাকা রোগী আনোয়ারার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আমি ভর্তি হয়েছি পাথর অপারেশন করার জন্য। অথচ এখন শুনছি যে আমার একটি কিডনি কেটে ফেলেছে। আমাকে এখন একটি কিডনি নিয়ে চলতে হবে। এদিকে মায়ের পাশে অবস্থানকারী ছেলে আইনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ডা. আলীর হসপিটালে ভর্তি হওয়ার আগে এক্স-রে করা হয়েছে। তখন পাথরটি দেখা গেছে কিডনির অনেক উপড়ে। ফলে পাথর অপারেশনের জন্য ভর্তি হয়। এক্স-রেতে কিডনির কোনো সমস্যা ধরা পড়েনি। কিন্তু পাথর অপারেশন করতে গিয়ে তিনি কিডনিটি কেটে ফেলেছে। একটি সূত্র জানায়, কিডনি কেটে ফেলার বিষয়টি জানাজানি হলে রাতেই রোগীর আত্মীয়-স্বজনকে ডেকে নিয়ে এক লাখ টাকার বিনিময়ে রফাদফা করেন ডা. হযরত আলী। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে।এ ব্যাপারে ডা. হযরত আলী বলেন, রোগীর আগে থেকেই একটি কিডনি নষ্ট ছিল। অপারেশন করে তা ফেলে দেয়া হয়েছে। রোগীর আত্মীয়-স্বজনেরা বিষয়টি ভুল বুঝে অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি তাদেরকে বোঝানোর পর এখন তারা শান্ত আছে বলে জানান তিনি। এমদাদ/এমএএস/এবিএস