জাতীয়

পরিচয় মিলল না শিশুটির

বার্ণ ইউনিটের সব অগ্নিদগ্ধ রোগীর বেডের পাশে অন্তত একজন করে স্বজন থাকলেও শুধু শিশু জাকিরের পাশে কেউ নেই। শরীরের কোথাও পোড়া চামড়া উঠে গিয়ে লাল। আবার মুখমণ্ডল-গলার চামড়া উঠে সাদা হয়ে আছে। চোখ দুটো ছিল আধা খোলা।গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত এমনই ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন শিশু জাকিরের শারীরিক অবস্থা।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে মারা যায় জাকির।ঢামেক হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটের রেজিস্ট্রার খাতায় শিশুটির নাম জাকির বলে উল্লেখ করা হলেও পিতার নামের জায়গা খালি। পরিচয়হীন অগ্নিদগ্ধ শিশুটি মারা গেছে।গত ১৩ জানুয়ারি সাভারের নবীনগরে দগ্ধ হন ১১-১২ বছরের শিশু জাকির (১১)। পরে সাভারের গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।সেখান থেকে শিশুটিকে ঢামেক বার্ন ইউনিটে ভর্তি করেন সাভারের গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।৯ দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টায় মারা যায় জাকির।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী ও প্লাস্টিক সার্জন সামন্ত লাল সেন শিশুটির মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মোজাম্মেল হক জানান, দগ্ধ অবস্থায় গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৩ জানুয়ারি তাকে অজ্ঞাত কয়েকজন যুবক ভর্তি করান।সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে।বার্ন ইউনিটের চিকিৎসা কর্মকর্তা সাজ্জাদ খন্দকারের অধীনে শিশুটি চিকিৎসাধীন ছিল। তিনি জানান, শিশুটিকে যখন এখানে ভর্তি করা হয় তখন শিশুটির শরীরের ৭০ শতাংশ আগুনে পোড়া ছিল। গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, শিশুটি একটি বাসের ভেতরে ছিল। চিকিৎসকদের সঙ্গেও কিছুটা ইশারায় শিশুটি জানিয়েছে, সে একটি বাসের ভেতরে অগ্নিদগ্ধ হয়েছে।তিনি আরও বলেন, শিশুটির নাম জাকির বলে জানা গেলেও পরিবারের ঠিকানা বা পিতার নাম জানা যায়নি।এ ব্যাপারে সাভারের গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের পরিচালক আশরাফউদ্দীন মল্লিক জানান, ১৩ জানুয়ারি রাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নবীনগর বাসস্ট্যান্ডের কাছে রাস্তার ওপর শিশুটিকে দগ্ধ অবস্থায় দেখে কয়েকজন যুবক উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নিয়ে আসেন।ওই যুবকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা কেউ শিশুটির স্বজননন। সে নিজের নাম জাকির বলতে পেরেছে। তাঁদের একজন বলে গেছেন শিশুটি একটি বাসে ছিল।জেইউ/এআরএস