রাজধানীর ধানমন্ডির মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রাস্তা ধরে কিছু দূর সামনে এগোলেই ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের সরকারি বাসভবন। তার ঠিক বিপরীতে বাড়িটির লোহার গেটে তালা ঝুলতে দেখা যায়। বুধবার দুপুরে বাড়ির দেয়ালের উপর দিয়ে উঁকি মারছিল কয়েকজন কলেজ শিক্ষার্থী। তাদের একজন অন্যদের উদ্দেশ্যে বলছিল, ইস কত সুন্দর বাড়িটি ভেঙে মাটিতে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। বাড়ির ভেতরে কোনো মানুষজন নেই। চারদিকে নীরবতা। এ কথা শুনে আরেক শিক্ষার্থী বললো, বলতে গেলে ধানমন্ডি লেকের হৃদয় (হার্ট) ছিল এই বাড়িটি। এটি ভেঙে ফেলায় লেকের সৌন্দর্য কেমন নষ্ট হয়ে গেছে। ধানমন্ডি ৫/এ রোডের ৬০ নম্বরের সেই জাহাজ বাড়ি খ্যাত ‘চিশতিয়া প্যালেস’এ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলাপন চলছিল। প্রাসাদসম এ বাড়িটি গত বছর ভেঙে ফেলা হয়। এক সময় জাহাজ বাড়িটির নানন্দিক সৌন্দর্য দেখতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ধানমন্ডি ছুটে আসতে। তাদের কেউ বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করার সুযোগ না পেলেও বাইরে থেকে উঁচু উঁচু গম্বুজ দেখে আনন্দ পেত। চিশতিয়া প্যালেস নামের সেই বাড়িটি ভেঙে ফেলায় এখন তা জনশূন্য।বুধবার সরেজমিনে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়িটির ভেতরে ‘সামান্তা’নামের একটি ডেভেলপার কোম্পানির সাইনবোর্ড ঝুলছে। সাইনবোর্ডে স্মাইলি কার্টুনের নিচে উই আর হিয়ার লেখা রয়েছে। বাড়িটির ভেতরে একটি মাটি কাটার ড্রেজার পড়ে আছে। বাড়িটিতে প্রবেশের দুটি লোহার গেটে তালা ঝুলছে।ক্রীড়া উপমন্ত্রীর বাড়ি সংলগ্ন অ্যাপার্টমেন্টের একজন নিরাপত্তাকর্মী জানান, ১৫ দশমিক ৮১ কাঠার এ বাড়িটিতে কিছুদিনের মধ্যেই বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে শুনেছি। আবাসিক ভবন, রেস্টুরেন্ট, জিমনেসিয়াম, সুইমিং পুলসহ আরও অনেক কিছু নির্মাণ করা হবে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত কিছু লোকজন বাড়ির ভেতরে থাকলেও বর্তমানে কেউ নেই। ১৯৯৩ সালে শের-ই-খাজা নামে এক ব্যক্তি চিশতিয়া প্যালেসের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৯৪ সালে। পরবর্তীতে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ধানমন্ডি লেক সংলগ্ন বাড়িটির কিছু অংশ ভেঙে হাঁটার পথ তৈরি করে। এরপর বাড়ির মালিক জাহাজ আকৃতিতে বাড়িটির সীমানা প্রাচীর তৈরি করে। তার মৃত্যুর পর ছেলেমেয়েরা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। এমইউ/জেএইচ/ওআর/এমএস