দেশজুড়ে

কৌশলে মুক্তিযোদ্ধা হলেন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা

বরগুনায় মো. সামসুল হক নামে এক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার নাম বাদ দিয়ে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তালতলী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সামসুল হক। সোমবার সকালে তালতলী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা মো. সামসুল হকের সন্তানরা।সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা সামসুল হকের বড় ছেলে শহিদুল হক লিখিত বক্তব্যে জানান, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৯নং সেক্টরের অধীন পটুয়াখালীর সাব-সেক্টর হেডকোয়ার্টার (বুকাবুনিয়া) ক্যাম্পে অবস্থান করে সাহসিকতার সহিত মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তার বাবা মৃত্যু সামসুল হক। ওই সেক্টরে সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা সিনিয়র ক্যাম্প অধিনায়ক জহির শাহ আলমগীর ও একই সেক্টরের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা এমএ রাব্বানী ফিরোজের দেয়া প্রত্যায়নে এবং কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যু সামসুল হকের সূচক নং-০৪-০৯-৩৯-০০৯।লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ আর্মস ফোর্সের ৯নং সেক্টরের ক্যাপ্টেন মেহেদী আলী ইমাম সাব-সেক্টর কমান্ডার, পটুয়াখালীর দেয়া সার্টিফিকেট থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৬ জুন থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত আমার বাবা মো. সামসুল হক তাদের সঙ্গে থেকে সক্রিয়ভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আমার বাবা মো. সামসুল হক হাওলাদার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বর্তমান সরকার ২০১৪ সালে অনলাইনে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চাওয়ায় আমরা ২ নভেম্বর-২০১৪ সালে আবেদন করি। যার ডিজি নং-১২১৯৩২৯ এবং জাতীয় পরিচয় পত্র নং-৩২৭০১০৯০১১৯১০০৪১।সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আবেদনের পর যাচাই-বাছাইয়ের সময় তার বাবার নামের সঙ্গে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আলী হাওলাদারের ছেলে ও তালতলীর সাবেক ওসি সামসুল হকের নামের মিল থাকায়, এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তার বাবার পরিবর্তে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সাবেক ওসি সামসুল হকের নাম।এ বিষয়ে তালতলী থানার সাবেক ওসি সামসুল হক বলেন, তালতলীতে কর্মরত থাকা অবস্থায় বড় বগীর ঠিকানায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি অন্তর্ভুক্ত হই। পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাসিন্দা হয়েও তালতলী উপজেলার বড় বগী ঠিকানায় মুক্তিযোদ্ধা হলেন কীভাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অস্থায়ীভাবে আমি ২০০৪ সালে তালতলী উপজেলায় মুক্তযোদ্ধা হই। ২০০৯ সালে আমি মন্ত্রণালয়ে আবেদনের মাধ্যমে তালতলী উপজেলা থেকে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় আমার নামের গেজেট অন্তর্ভুক্ত হয়। এ সময় তিনি বড় বগীর সামসুল হক হাওলাদারের নাম কেটে তার নাম অন্তর্ভুক্তির কথা অস্বীকার করেন।এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাচাই কমিটির সদস্য সচিব ও তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তৌছিফ আহম্মেদ জানান, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল থেকে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যে নাম এসেছে, যাচাই-বাছাইয়ের সময় তাদের ডাকা হয়েছে। তবে তালতলী থানার সাবেক ওসি সামসুল হক যদি মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও দুর্নীতির মাধ্যমে অন্যের নাম ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় তার না অন্তর্ভুক্ত করেন তাহলে তদন্তের মাধ্যমে তার নাম বাদ দেয়া হবে।   সাইফুল ইসলাম মিরাজ/এআরএ/পিআর