দেশজুড়ে

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজনগরের জনপদ

আর ক’দিন পরেই মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার হাওর কাওয়াদীঘি জনপদের চাষিরা ধান কাটার মহা উৎসব শুরু করবে। কৃষকের গোলাভরে উঠবে নতুন ধান। নবান্নের উৎসবে মেতে উঠবে পাড়ার কৃষানিরা। যখন নতুন ধান উঠানোর আশা নিয়ে প্রস্তুতি চলছিল। ঠিক তখনই ১০/১৫ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড় ও প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি লণ্ডভণ্ড করে দেয় সে আশাকে।জেলার রাজনগর উপজেলার হাওর কাওয়াদিঘি জনপদের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ১০/১৫ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড় লণ্ডভণ্ড করে দেয় হাওর জনপদের ৪টি ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের তিন শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি। বেসরকারি হিসেবে ১৫০০ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হলেও সরকারি হিসেবে ৭০০ হেক্টর ফসলের ক্ষতির কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পশ্চিম-উত্তর দিক থেকে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড় ও প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি হাওর অঞ্চলের গ্রামগুলোতে তাণ্ডব চালিয়ে যায়। মুন্সিবাজার ইউনিয়নের সুপ্রাকান্দি গ্রামে শিলার আঘাতে মনফর আলী (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হন। এ সময় ওই এলাকায় নিহতের ছেলে কদর আলীসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে সরেজমিনে সোনাটিকি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ বাড়ির টিনের ঘরের চালা শিল পড়ে ঝাঁজরা হয়ে গেছে। অনেকেই বসতঘর ছেড়ে দিচ্ছেন। সোনাটিকি সুপ্রাকান্দি গ্রামের পিছনের জালাইর বন্দগাংগের মুড়া ক্ষেতের মাঠে গিয়ে দেখা যায় উঠতি পাকা ধান শিলা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। ধান ঝরে গিয়ে শুধু শিষ অবশিষ্ট রয়েছে। পাঁচগাও ইউনিয়নের রক্তা, খালদার, আমিরপুর। মুন্সিবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাতির মিয়া জানান, তার এলাকার সোনাটিকি, মেদিনীমহল, সুপ্রাকান্দি, পথরগাঁও, বুড়িঝিরপার করিমপুর, গয়াসপুরসহ বাগান এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শতাধিক কাঁচা ঘর-বাড়ি ও এলাকার উঠতি বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি করেছে এই শিলাবৃষ্টি। ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান জানান, তার এলাকার কাশিমপুর, জাহিদপুর, বেতাহুঞ্জা, মুনিয়ারপার, শাহবাজপুর, গোলাইয়ারপার, এলাকার উঠতি বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতিসহ কয়েকশত ঘরবাড়ি বিনষ্ট হয়েছে। রাজনগর উপজেলা কৃষি অধিদফতরের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মলয় চন্দ্র দেবনাথ জানান, আমাদের রিপোর্ট অনুযায়ী কাওয়াদীঘির হাওরের আবাদি ২৮ হাজার হেক্টর বোরো ফসলের মধ্যে ৭০০ হেক্টর বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আইনুর আক্তার পান্না জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানোর জন্য চেয়ারম্যানদেরকে বলেছি। রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।এমজেড/বিএ/এমএস