দেশজুড়ে

জাগো নিউজের আরেক মিশন শিশু ইব্রাহিম

দেশের বেশ কিছু জেলায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে প্রথমে সংবাদ প্রকাশ। এরপর হৃদয়বানদের কাছ থেকে চিকিৎসা বাবদ কিছু খরচ সংগ্রহ করা। এরপর শিশুদের জাগো নিউজের পক্ষ থেকে রাজধানীর যেকোনো হাসপাতালে ভর্তি করা। সু্স্থ করে বাড়ি পাঠানো পর্যন্ত সার্বিক দায়িত্ব পালন করছে দেশের পজিটিভ ধারার অনলাইন নিউজপোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কম।ইতোমধ্যে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের ৯ বছর বয়সী কিশোরী দেব্রশী, পাবনার বেড়া উপজেলার ৬ বছর বয়সী নুর নাহার ও কুমিল্লার ২২ বছর বয়সী তরুণী তাহমিমার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে জাগো নিউজ। এর মধ্যে নুর নাহার পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গত সপ্তাহে বাড়ি গেছে। দ্রেবশী ও তাহমিমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।দেব্রশীর প্রথম ধাপের অপারেশনে জিহ্বা থেকে টিউমার অপারেশন করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে তার ঠোঁটের অপারেশন, এরপর গলায় অপারেশন সম্পন্ন হবে।এদিকে রোববার সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দেড় বছর বয়সী শিশু হাসানকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার বিষয়েও সার্বিক দায়িত্ব পালন করছে জাগো নিউজের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আকরামুল ইসলামসহ অনেকে।জাগো নিউজের এসব কাজ ইতোমধ্যে পাঠকমহলে ব্যাপক আস্থা তৈরি করেছে। ফলে অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে অসুস্থ মানুষটিকে নিয়ে ছুটে আসছেন জাগো নিউজের কার্যালয়ে।   এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পাঁচ বছর বয়সী শিশু ইব্রাহিমের সাহায্য চেয়ে এ প্রতিবেদকের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কয়েকজন অনুরোধ করেন।এরপর এই প্রতিবেদক বিষয়টি জাগো নিউজের নড়াইল প্রতিনিধি হাফিজুল নীলুকে অবগত করেন। তিনি স্থানীয়ভাবে খোঁজখবর নিয়ে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।ইতোমধ্যে শিশুটির চিকিৎসার ব্যাপারে কথা হয়েছে ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক এটিএম আসাদুল্লাহ’র সঙ্গে।তিনি ফেসবুকে শিশুটির ছবি দেখে জাগো নিউজকে জানান, প্রথমে শিশুটির সিটিস্ক্যান করাতে হবে। সেখানে যদি তার মাথার উপরের অংশের সঙ্গে ভেতরের কোনো সংযোগ থাকে তাহলে পরবর্তী বেশ কিছু ধাপ অাছে সেগুলো অবলম্বন করতে হবে। অার যদি এটি তার মাথার খুলির উপরের অংশে হয় তাহলে সহজ প্রক্রিয়ায় অপারেশন সম্ভব। তিনি বলেন, ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স একটি সরকারি হাসপাতাল। এখানে খরচ নেই বললেই চলে। তবে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে খরচ হয়। তিনি শিশু ইব্রাহিমকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে অাসার পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে সার্বিক সহযোগিতারও আশ্বাস দেন।এ ব্যাপারে কথা হয় ইব্রাহিমের মা সুমাইয়ার সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে জানান, ইব্রাহিমের বাবা গাজীপুরায় একটি পোশাক কারখানায় অপারেটর পদে চাকরি করেন। মাসে মাত্র ৭ হাজার টাকা বেতন পান। সেই টাকা দিয়ে দুই সন্তান নিয়ে কোনো মতে সংসার চলে তাদের। তাই শিশুটির ভালো চিকিৎসা করাতে পারেননি তারা।তিনি আরও জানান, ইব্রাহিমের বয়স যখন দুই বছর তখন ধারদেনা করে ঢাকায় বাংলাদেশ মেডিকেল ও ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে দেখানো হয়েছে। সিটিস্ক্যানসহ অনেক পরীক্ষা করানো হয়েছে। সেখানে চিকিৎসক বলেছিলেন তার অপারেশন করতে অনেক টাকা লাগবে। এটা শুনেই আমরা পিছিয়ে গেছি। শিশুটির মা আরও জানান, ইব্রাহিমের এটি জন্মগত সমস্যা। যত দিন যাচ্ছে ততই টিউমারটি বড় হচ্ছে। এছাড়া তার ডান পায়ে শক্তি কম। বাম পায়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না ডান পা।তিনি বলেন, কেউ যদি ইব্রাহিমের চিকিৎসার ব্যাপারে সহযোগিতা করে তার কাছে ঋণী থাকবো।ইব্রাহিমের বিষয়ে কথা হয় লোহাগড়া উপজেলার লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বনি আমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ওই ইউনিয়নের বয়রা গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে ইব্রাহিম। কথা হয় বয়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক রবিউল ইসলামের সঙ্গে।তারা সবাই শিশুটির পারিবারিক অবস্থার বর্ণনা করে সাহায্য কামনা করেন।এমএএস/আরআইপি