দেশজুড়ে

৭ বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে দোকান ও গাছতলায়

কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত নড়াইলের কালিয়া উপজেলার সাতটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে দোকানঘর ও গাছতলায়। অনুকূল পরিবেশ না থাকায় ও প্রচণ্ড খরতাপে ওইসব বিদ্যালয়ের দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অসুস্থতাসহ নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। যে কারণে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম।

মেঘ দেখলেই বৃষ্টি ও ঝড়ের ভয়ে শিক্ষার্থীদের আগাম ছুটি দিতে শিক্ষকরা বাধ্য হচ্ছেন। স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এর সত্যতা স্বীকার করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৩ এপ্রিল বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে কালিয়া উপজেলার বুড়িখালী, যাদবপুর পূর্বপাড়া ও দক্ষিণ জামরিলডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। মাউলী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাতবাড়িয়া, পূর্ব পেড়লি ও পশ্চিম পেড়লি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের চালা উড়ে গেছে। ফলে ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পেড়লী ইউনিয়নের দক্ষিণ জামরিলডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনসেডটি ঝড়ে বিধ্বস্ত হওয়ায় এখন পাটদান চলছে বিদ্যালয়ের সামনের নারিকেল গাছ তলায়।

একই চিত্র পার্শ্ববর্তী পুরুলিয়া ইউনিয়নের বুড়িখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়টিতে কোনো ভবন নির্মাণ না হওয়ায় পুরাতন টিনসেডের ঘরেই ক্লাস নেয়া হতো। কিন্তু কালবৈশাখী ঝড়ে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হওয়ায় বিদ্যালয় থেকে ৩০০ গজ দূরে রাস্তার পাশের একটি দোকান ঘরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হচ্ছে।

রাস্তায় যানবাহনের হর্ন, বাজারের কোলাহলসহ নানা প্রতিকূলতার কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।

পাঁচগ্রাম ইউনিয়নের যাদবপুর পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি কালবৈশাখী ঝড়ে উড়ে যাওয়ায় সেখানেও শিক্ষার্থীদের পাঠদানের কোনো পরিবেশ নেই। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিকল্পভাবে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা পাঠদান চালু রাখার চেষ্টা করছেন।

এছাড়া মাউলী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাতবাড়িয়া, পূর্ব পেড়লি ও পশ্চিম পেড়লি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের চালা উড়ে যাওয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

দক্ষিণ জামরিলডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা প্রজ্ঞা পারমিতা বিশ্বাস বলেন, প্রচণ্ড রোদে বাইরে ক্লাস নেয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাছাড়া নারিকেল গাছের নিচে ক্লাস নেয়াটাও অনেক ঝুকিপূর্ণ। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে এখন ভয় পাচ্ছেন। দুই শতাধিক ছাত্রছাত্রী নিয়ে  বেকায়দায় পড়েছি।

পাঁচগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান বলেন, ভেঙে যাওয়া বিদ্যালয়টি স্থাপনের জন্য ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। দ্রত একটি সমাধানে পৌঁছতে পারবো।

কালিয়া উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার শেখর কুমার মিত্র বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান চালু রাখতে স্থানীয়ভাবে যথাযত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মেরামতসহ ভবন নির্মাণের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।

হাফিজুল নিলু/এফএ/আরআইপি