বাংলাভিশনের জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক ‘অ-এর গল্প।’ আগামী ৩ জুন, বুধবার ১৭৭ তম পর্ব প্রচারের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে ধারাবাহিকটি। অন্যায়, অপরাধ, অন্ধকার, অলৌকিক, অতিপ্রাকৃত এবং এই ধরনের সত্য ঘটনার নাট্যরূপ নিয়ে প্রচারিত হত ‘অ-এর গল্প’ প্রচার হতো সপ্তাহের প্রতি মঙ্গল ও বুধবার, রাত ৯টা ৫ মিনিটে। তানভীর হোসেন প্রবাল এর পরিচালনায় এই ধারাবাহিক নাটকটিতে দেশের পরিচিত অভিনেতা অভিনেত্রীদের পাশাপাশি অভিনয় করতেন দেশের বিভিন্ন নাট্যদলের নবীন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। এ ধারবাহিক নিয়ে নানা কথা জানালেন বাংলাভিশনের অনুষ্ঠান প্রধান এবং উপস্থাপক শামীম শাহেদ। প্রশ্ন : ‘অ-এর গল্প’ অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল? এতটা জনপ্রিয় হওয়ার পিছনে কারণ কী ছিল বলে আপনি মনে করছেন?শামীম শাহেদ : দেখুন বিগত সময়গুলোর আমার অভিজ্ঞতায় আমি দেখেছি যে অনুষ্ঠান বা নাটক মানুষের কথা বলবে সেটাই জনপ্রিয় হবে। যে যত সরলভাবে বলবে সে তত জনপ্রিয় হবে। ‘অ-এর গল্প’ অত্যন্ত সরলতার সঙ্গে মানুষের কথা, মানুষের কষ্টের কথা, মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকা পশুত্বের কথা বলে যেত। তাই ‘অ-এর গল্প’ জনপ্রিয় হয়েছে। আর ধারাবাহিক নটিকটিতে এমন সব অভিনয় শিল্পীরা অভিনয় করত যাদের দেখলে মনে হতো এটা তাদের জীবনেরই ঘটনা।প্রশ্ন : আপনি দ্বিতীয়বার বাংলাভিশনের সঙ্গে যুক্ত হলেন পাঁচ বছর হয়ে গেল। এই পাঁচ বছরে অনেকগুলো নাটক এবং অনুষ্ঠান জনপ্রিয় হয়েছে। এর পেছনে মূল শক্তিটা কী?শামীম শাহেদ : এর পিছনে মূল শক্তিটা হচ্ছে স্বাধীনতা। আপনি যদি কাইয়ূম স্যারকে বলেন, একটা ছবি আঁকুন, তাহলে কাইয়ূম স্যার ক্যানভাসে কোন রংটা কীভাবে ব্যবহার করবেন সেটা তাঁর স্বপ্নের সঙ্গে, ভাবনার সঙ্গে মিশে আছে। এখন কেউ যদি তাকে বলে, না এই রঙ ব্যবহার করা যাবে না, আপনি এই রঙ ব্যবহার করুন। এই ভাবে স্ট্রোক না দিয়ে এইভাবে দেন-তাহলে কী দাঁড়াবে? ছবি ঠিকই হবে কিন্তু কাইয়ূম স্যার এর স্বপ্ন পর্যন্ত পৌছানো কঠিন হবে। আমাদের বেলাতেও তাই ঘটেছে। আমাদের ভাবনা অথবা স্বপ্ন অনুযায়ি কাজ করতে পেরেছি বলেই আমরা পেয়েছি- আরমান ভাই, সিকান্দার বক্স, ফরমালিন, লংমার্চ, রেড-সিগন্যাল, অ-এর গল্প, আমার আমি, ফ্রন্ট লাইন, আমি এখন কী করব, মনের কথার মতো দর্শকপ্রিয় সব অনুষ্ঠান। প্রশ্ন : আপনি বাংলাভিশনের অনুষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ‘অ-এর গল্প’-এর উপস্থাপনার কাজটাও করেছেন। কেন করলেন?শামীম শাহেদ : আমার প্রতিটি মুহুর্তে মনে হচ্ছে, একটা চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব পালন করে আমি আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়টাকে নষ্ট করছি। আমি যে কাজটা করছি, বা যতটুকু অর্জন করছি তা আমার এই ‘অনুষ্ঠান প্রধান’ পদবীটার সঙ্গেই থেকে যাবে।অফিসে অনুষ্ঠান প্রধানের কাজ করার চাইতে আমার কাছে বেশি আনন্দের মনে হয় যখন আমি কোনো একটা নাটক নির্দেশনা দেই, যখন একটা উপন্যাস লিখি, যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস নেই, যখন একা একা রাস্তায় হাটি, একটা নদীর পাশে বসে থাকি কিংবা কোনো একটা ভালো বই পড়ি। এই উপস্থাপনাটা সেই রকম একটু দুধের স্বাদ ঘোলে মিটানোর মতোই। প্রশ্ন : সম্প্রতি বাংলাভিশন নবম বর্ষ পূর্ণ করে দশম বর্ষে পদার্পণ করল। টেলিভিশন চ্যানেল হিসেবে বাংলাভিশন এখন কোন পর্যায়ে আছে বলে আপনি মনে করেন?শামীম শাহেদ : আমরা যেধরনের টেলিভিশন চ্যানেলের স্বপ্ন দেখি বাংলাভিশন নিয়ে আমরা তার কাছাকাছিও পৌঁছাতে পারিনি। আমরা স্বপ্ন দেখি এমন একটা চ্যানেলের যে চ্যানেলটি তরুণদের স্বপ্ন দেখাবে, দেশের কথা বলবে, সুন্দর সমাজ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা নেবে। একটা প্রফেশনাল চ্যানেল হিসেবে দাঁড়ানোর জন্য বাংলাভিশন ভালোই গতিশীল। কিন্তু অনেকদূর যেতে হবে। প্রশ্ন : আপনার সামনের পরিক্ল্পনা কী?শামীম শাহেদ : বেশ কয়েকটি নতুন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা রয়েছে। রম্য ধাচের নাটকগুলোর সাফল্যের পর আমরা এখন পরিবার কেন্দ্রিক অনুষ্ঠান বা নাটক বানানোর পরিকল্পনা করছি। পারিবারিক বন্ধনগুলো দিন দিন হালকা হয়ে যাচ্ছে। এটা নিয়ে কাজ করতে হবে। দেখা যাক। এলএ