দেশজুড়ে

কুড়িগ্রামে ভাঙ্গে নদী কান্দে মানুষ

`বাপুরে আমাগো সউগ শ্যাষ হয়া গেল। বউ-পোলাপান নিয়্যা কোন্ডে উডুম। কি খামু বুঝবার পাইতাছি না। আমাগো দেখার কেউ নাই।` নদীর কিনারে বুকে রক্তক্ষরণ নিয়ে উদ্ভ্রান্ত চোখে বসে আছেন মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের ব্যাপারী পাড়া গ্রামের মহির উদ্দিন। এবার নিয়ে তাকে ৩ বার নদী ভাঙনের শিকার হতে হল। এখানকার দিয়ারারচরের ফকির পাড়া গ্রামের আমিনুল ইসলাম, মাঠের ভিটার মহিজল ও ব্যাপারী পাড়ার আদিল চন্দ্র জানান, গত ৭ দিনে ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদী ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে নদী তীরবর্তী ৫ গ্রামের প্রায় দেড়শ বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ভাঙনের কারণে এই উপজেলার নয়াচর আলিম মাদ্রাসা, নয়াচর বাজার এমবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২টি বিশাল মাঠসহ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। একই ঝুঁকিতে রয়েছে মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, মোহনগঞ্জ বাজার মসজিদ ও নয়াচর বাজারের ৩ শতাধিক দোকানপাট। দ্রুত সময়ে এগুলো সরিয়ে নেয়া দরকার। এদিকে শুক্রবার সকালে কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য রুহুল আমিন ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন রাজিবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিউল আলম ও ইউএনও আবদুল লতিফ খান। মোহনগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন আনু জানান, গত ১৫ দিনে তার ইউনিয়নের ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১টি মসজিদ ও ২ শতাধিক ঘর-বাড়িসহ শতাধিক একর ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে মোহনগঞ্জ ইউপি ভবন ও তৎসংলগ্ন মোহনগঞ্জ বাজার। নদী ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া না হলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন। তিনি জরুরি ভিত্তিতে নদী ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।নাজমুল হোসাইন/এমজেড/পিআর