নরসিংদীর শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের ছাত্র সৈকত গাজী। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে তার চোখের উপরে থাকা টিউমারের আকার। এর পাশাপাশি শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগ। প্রায় এক কেজি ওজনের এই টিউমারটি নিয়ে দুর্বিষহ জীবন পার করছে সৈকত।
শিবপুরের দক্ষিণ সাদারচর ইউনিয়নের সৈয়দেরখলা গ্রামের মোস্তফা গাজীর বড় ছেলে সৈকত গাজী প্রায় ১৫ বছর যাবত তার ডান চোখের উপর এই টিউমার বহন করে আসছে। সৈকতের এই অবস্থা দেখে অনেকে ভয়ে-আতঙ্কে তার কাছ থেকে সরে যায়। আর এসব কারণে সে নিজেকে সব সময় লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে। শুধুমাত্র কলেজে যাওয়া আসা ছাড়া বাকি সময়টা সে বাড়িতেই থাকে।
২০১৬ সালে দক্ষিণ সাদারচর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজে ভর্তি হয় সৈকত। বর্তমানে সে ওই কলেজের এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে তার। সৈকতের বাবা একজন দরিদ্র কৃষক। পরিবারের ভরণপোষণ করে ছেলের চিকিৎসার খরচ যোগাতে পারছে না তার বাবা।
সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় সৈকত ও তার পরিবারের সঙ্গে। এ সময় সৈকতের বাবা মোস্তফা গাজী জানান, সৈকতের যখন তিন বছর বয়স তখন তার ডান চোখে ছোট একটি টিউমার দেখা দেয়। পরে এটি বড় আকার ধারণ করতে থাকলে ১০ বছর বয়সে তাকে ঢাকায় চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর থেকে এটি আরও বাড়তে থাকে । একপর্যায়ে ডাক্তাররা সৈকতকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে বলেন। ছেলের উন্নত চিকিৎসা করার খরচ তার নেই। যার কারণে চিকিৎসার অভাবে দিনদিন সৈকতের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে।
সৈকত গাজী জানায়, টিউমারের কারণে ডান পাশের চোখ ঢেকে আছে। টিউমার সরিয়ে ওই চোখ দিয়ে সে ঝাপসা দেখতে পায়। মাঝে মাঝে ব্যাথায় অস্থির হয়ে ওঠে। স্বাভাবিক মানুষের মতো জীবন যাপনের ইচ্ছা প্রকাশ করে সৈকত তার চিকিৎসায় সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছে।
সঞ্জিত সাহা/আরএআর/পিআর