লালমনিরহাটের ৪টি উপজেলাসহ বৃহত্তর রংপুরের কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন কাকিনা-মহিপুর দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতুর কাজ তৃতীয় দফায় মেয়াদ শেষ হলেও নানা অজুহাতে চালু করা হচ্ছে না। এতে লালমনিরহাট জেলার কয়েক লাখ মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে জেলার বন্যাকবলিত হাজারও মানুষ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং নির্মাণ তদারকি সংস্থার খাম-খেয়ালির কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক দফা মেয়াদ বাড়ানোর পর চলতি বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু চালু করা হচ্ছে না। বন্যার্ত মানুষের কথা ভেবে সেতু দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচলের সুযোগ দেয়ার দাবি এলাকাবাসীর।
লালমনিরহাট এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সেতুটির মূল অংশের ৯৯ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই এটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। সেতুটি চালু হলে লালমনিরহাট সদরসহ আদিতমারী, কালীগঞ্জ ও হাতীবান্ধার সঙ্গে রংপুরের দূরত্ব ৩০-৫০ কিলোমিটার কমে আসবে। সহজতর হবে পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে পণ্য পরিবহনও। একই সঙ্গে এসব এলাকার মানুষের যাতায়াত-সংক্রান্ত ভোগান্তিও বহুলাংশে কমে যাবে। ভৌগোলিক কারণে লালমনিরহাটের উল্লিখিত উপজেলাগুলোর অবস্থান রংপুর বিভাগীয় শহরের খুব কাছে। কিন্তু এখানে তিস্তা নদীতে সেতু না থাকায় এসব অঞ্চলের মানুষকে রংপুর যেতে দীর্ঘপথ অতিক্রম করতে হচ্ছে।
কাকিনা ইশোরকুল গ্রামের আবু তালেব বলেন, সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছি। নৌকা পারাপারে অনেক সময় লাগছে। বন্যার্ত মানুষের কথা চিন্তা করে দ্রুত সেতুটি খুলে দেয়া হোক।
সেতু নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাভানা কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের এক প্রকৌশলী বলেন, সেতু প্রকল্পের কাজ ৯৯ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এখন মূল ব্রিজের সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগসহ সড়কের কাজ দ্রুত চলছে। ৮৫০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৯ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের এই সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। সংযোগ সড়ক তৈরির পরই চালু করা হবে সেতুটি।
কালীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহমেদ বলেন, বন্যা কবলিত লোকজন যাতে তিস্তা সেতু দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে পারে- সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার এলজিইডি প্রকৌশলী পারভেজ নেওয়াজ খান জানান, সেতুর এ প্লাস বাঁধ নির্মাণ কাজ এখনো চলছে। বন্যার কারণে তিস্তা সেতু তিনদিন উন্মুক্ত করা হয়ে ছিল।
রবিউল হাসান/আরএআর/আরআইপি