দেশের মোট জনসংখ্যার এক শতাংশ (১৬ লাখ) প্রতিবন্ধী বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, তাদের (প্রতিবন্ধী) প্রতি আমাদের ভালো আচরণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, তারা নিজের ইচ্ছায় প্রতিবন্ধী হয়নি। গতকাল রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২৬তম আন্তর্জাতিক এবং ১৯তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘সবার জন্য টেকসই ও সমৃদ্ধ সমাজ গড়ি’ প্রতিপাদ্যে এ বছর দিবসটি পালন করা হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার প্রতিবন্ধীদের বিশেষভাবে নজর দেন। বর্তমানে প্রতিবন্ধীদের জন্য ১০০টি সেবা কেন্দ্র আছে। আরও ৪০টি গড়ে তোলা হবে। সরকার প্রতিবন্ধীদের জন্য মাঠের ব্যবস্থা করছে। এর জন্য সাভারে জায়গা নেয়া হয়েছে, শিগগিরই এ মাঠ খেলার উপযুক্ত করা হবে। প্রতিবন্ধীসহ অনগ্রসর-অবহেলিত জনগোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণের কথা সংবিধানেই রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের সংবিধানে জাতির জনক শুধু সংবিধানেই এর সংযোজন ঘটাননি, প্রতিবন্ধীদের ভাগ্যের উন্নয়নেও অনেক পদক্ষেপ নেন।
প্রতিবন্ধী, অটিস্টিকসহ পিছিয়ে থাকা মানুষের সেবা করা অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। সমাজে প্রতিবন্ধীর সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। বর্তমান আর্থসামাজিক অবস্থায় প্রতিবন্ধিতা এখন আর কোনো সমস্যা নয়। সমাজের আর ১০ জন মানুষের মতোই তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারেন। সেজন্য তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে।
অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিশুদের দক্ষতা এবং সক্ষমতার নিরিখে তাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে হবে। প্রত্যেক প্রতিবন্ধী এবং অটিস্টিক ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক, চিকিৎসা এবং শিক্ষা সহায়তা দেয়া জরুরি। প্রতিটি স্কুলে প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা অর্জনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এটা হলে তারা আর ১০টা স্বাভাবিক শিশুর সঙ্গে মিশে শিক্ষা লাভ করে সমাজের মূল ধারায় সম্পৃক্ত হতে পারবে। এছাড়া রাস্তা-ঘাট, ফুটপাত এবং নতুন অবকাঠামো যেখানেই হচ্ছে, সেখানে প্রতিবন্ধীদের সহজে চলাচলের জন্য পৃথক লেন করতে হবে।
সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব রয়েছে। এদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে উন্নয়নের মূলস্রোত ধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। প্রতিবন্ধীরা যাতে কোনো ধরনের বৈষম্যের শিকার না হয়- সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য সবার আগে প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন।
এইচআর/জেআইএম