প্রায় দুই বছর পেরিয়েছে সাগরের তলদেশ দিয়ে সরাসরি জাহাজ থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাসের জন্য নির্মিত সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) প্রকল্পের নির্মাণকাজ। প্রকল্পও হস্তান্তর হয়েছে প্রায় এক বছর আগে। এই দীর্ঘ সময়ও চালু করা যায়নি প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকায় নির্মিত প্রকল্পটি। পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলেও ১৫ বছর এসপিএম অপারেশনে আগ্রহ দেখিয়েছে শিপিং করপোরেশন।
বৈদেশিক ঋণের সঙ্গে নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে রাষ্ট্রীয় জ্বালানি আমদানি, পরিশোধন ও বিপণন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। তবে এসপিএমের মতো উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন প্রকল্প পরিচালনায় সরাসরি কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকার পাশাপাশি পরিচালন ঠিকাদার নিয়োগে জটিলতার কারণে বিপিসির পক্ষে প্রকল্পটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। এ সুযোগে সরকারের আরেক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) এসপিএম প্রকল্পটি পরিচালনার আগ্রহ দেখিয়েছে।
ইতোমধ্যে শিপিং করপোরেশনের আগ্রহের বিষয়টি নিয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে একটি মিটিংও হয়েছে। শিপিং করপোরেশন বলছে- তাদের অভিজ্ঞ জনবল রয়েছে, পাশাপাশি অভিজ্ঞ অংশীদার নিয়োগের মাধ্যমে তারা এসপিএম প্রকল্পটি পুরোপুরি অপারেশন করতে চায়। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএসসি রাষ্ট্রীয় জাহাজ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
বিপিসি সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে বর্তমানে বছরে প্রায় ৭২ লাখ টন জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। ৯২ শতাংশ আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হয় সরকারি প্রতিষ্ঠান বিপিসিকে। এর মধ্যে ১৫ লাখ টন আমদানি করা পেট্রোলিয়াম ক্রুড পরিশোধন করে পাওয়া যায়। বিপিসির আমদানি করা ১৫ লাখ টন ক্রুডের পুরোটাই পরিবহন করে বিএসসি। এসব ক্রুড আমদানির ক্ষেত্রে মাদার ট্যাংকার ভাড়া নেওয়া থেকে শুরু করে পতেঙ্গার মূল স্থাপনায় লাইটারিংয়ের দায়িত্ব পালন করে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
জাহাজ থেকে জ্বালানি খালাসের জন্য মেরিন অংশে এসপিএম হুকিং করার অভিজ্ঞতা বিপিসির নেই। যে অভিজ্ঞতা বিএসসির অনেক অফিসারের রয়েছে। এ কাজগুলো আমরা নিয়মিত করে আসছি। আমাদের জিএম প্ল্যানিংয়েরও এ ধরনের কাজের ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।- বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক
এদিকে বঙ্গোপসাগরের কর্ণফুলী চ্যানেলের নাব্য ৮ মিটার থেকে ১৪ মিটারের নিচে হওয়ায় অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে ক্রুড অয়েলবাহী বড় ভ্যাসেল হ্যান্ডেল করতে পারে না চট্টগ্রাম বন্দর। এ কারণে ক্রুড অয়েলবাহী মাদার (বড়) ভ্যাসেলগুলো গভীর সমুদ্রে নোঙর করা হয়। মাদার ভ্যাসেল থেকে লাইটারেজে করে ক্রুড আনলোড করা হয়।
লাইটারেজ অপারেশনের মাধ্যমে ক্রুড আনলোড করা সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। আমদানি করা জ্বালানি খালাসে ব্যয় ও সময় বাঁচানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা বাড়াতে ২০১০ সালে ‘ইন্সটলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন’ প্রকল্পটি হাতে নেয় বিপিসি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে লাইটারেজ অপারেশনের পরিবর্তে পাইপলাইনে তেল পরিবহনের ফলে পরিবহন খরচ বছরে ৮শ কোটি টাকা সাশ্রয় ও সময় এক তৃতীয়াংশ কমবে এমন কথা জানিয়েছিল বিপিসি।
আরও পড়ুনতদন্ত হচ্ছে বিপিসির সেই ১২৫ কোটি টাকা গচ্চার ঘটনাকুমিল্লায় দেশের প্রথম স্বয়ংক্রিয় জ্বালানি বিপণন ডিপো বিপিসিরবেসরকারিতে ঝুঁকছে জ্বালানি খাত, একক নিয়ন্ত্রণ হারাবে বিপিসি
এদিকে প্রাথমিক প্রস্তাবনা কয়েকবার সংশোধিত হয়ে ২০১৬ সালের ১৮ আগস্ট ৫ হাজার ৪২৬ কোটি ২৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকায় প্রকল্পটির প্রশাসনিক অনুমোদন দেয় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর জি টু জি ভিত্তিতে ইপিসি (ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন) ঠিকাদার চীনের ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের (সিপিপিইসিএল) সঙ্গে চুক্তি করে বিপিসি। প্রায় দেড় বছর পর ২০১৮ সালের ১৪ মে থেকে কাজ শুরু করে তারা। এরপর আরও কয়েক দফা সংশোধিত হয়ে প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়ায় ৮ হাজার ৪০৯ কোটি ৯৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা।
প্রকল্পটির নির্মাণকাজ তত্ত্বাবধান করেন বিপিসির অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল)। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকল্পটি বিপিসির পাইপলাইন ব্যবস্থাপনার জন্য গঠিত আরেক অঙ্গ প্রতিষ্ঠান পেট্রোলিয়াম ট্রান্সমিশন কোম্পানি পিএলসিকে (পিটিসিপিএলসি) হস্তান্তর করে ইআরএল।
এর আগে ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর জাহাজ থেকে এসপিএমের সাহায্যে সাগরের তলদেশে পাইপলাইনের মাধ্যমে ক্রুড অয়েল কক্সবাজারের মহেশখালীর কালারমারছড়ায় ট্যাংক টার্মিনালে নেওয়া হয়। পরে পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রায় ৪০ হাজার টন অপরিশোধিত জ্বালানি পতেঙ্গা ইস্টার্ন রিফাইনারিতে আনা হয়। ধারাবাহিকভাবে এসপিএমের মাধ্যমে জাহাজ থেকে ডিজেলও খালাস করে কালারমারছড়ার ট্যাংক টার্মিনালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩০ হাজার টন ডিজেল পাইপলাইনের মাধ্যমে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে আনা হয়। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে এসপিএমের কমিশনিং সফলভাবে শেষ হওয়ার পর ওই বছরের আগস্টে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রকল্পটি বুঝে নেয় বিপিসি। এরপরই পুরো প্রকল্পটি পরিচালনার জন্য সরকারি সিদ্ধান্তে বিদেশি অপারেটর নিয়োগ দেওয়ার পদক্ষেপ নেয় বিপিসি।
তারা যদি সক্ষমতা দেখাতে পারে, তাহলে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে। কিন্তু তাদের সেই সক্ষমতা নেই, তারাও অপারেটর নিয়োগ করবে। তারা যদি অপারেটর নিয়োগ করে, সেটা তো আমরা (বিপিসি) করলেই পারি।- বিপিসির পরিচালক (অপারেশন ও পরিকল্পনা) ড. এ কে এম আজাদুর রহমান
তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে সরকারি সিদ্ধান্ত ছিল প্রকল্পটি জি টু জি ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডকে (সিপিপিইসিএল) পরিচালনার জন্য দেওয়া হবে। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এসপিএম পরিচালনায় স্বচ্ছতা আনতে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে অপারেটর নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে সরকারের সিদ্ধান্তটি হোঁচট খায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিপিসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সারাবিশ্বে এ ধরনের (এসপিএম) প্রকল্পগুলোর ওঅ্যান্ডএম (অপারেশন অ্যান্ড মেনটেন্যান্স) কাজও প্রথম পর্যায়ে ইপিসি ঠিকাদারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমাদের ক্ষেত্রেও এ ধরনের সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে উন্মুক্ত দরপত্রের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে পুরো প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হয়ে পড়েছে। বাতিল করা হয়েছে প্রথম দফার টেন্ডার। এখন রিটেন্ডারের প্রক্রিয়া চলছে।’
প্রথম টেন্ডারে নেদারল্যান্ডসের ব্ল-ওয়াটার ও সিপিপিইসিএল যৌথভাবে এবং ইন্দোনেশিয়ার পার্টামিনা ট্রান্সকন্টিনেন্টাল ইন্দোনেশিয়া লিমিটেড দুটি প্রস্তাব দেয়। এর মধ্যে নেদারল্যান্ডসের ব্ল-ওয়াটার ও সিপিপিইসিএলের কারিগরি প্রস্তাবনাটি অযোগ্য হয়। পাশাপাশি পার্টামিনার কারিগরি প্রস্তাবযোগ্য হলেও তাদের আর্থিক প্রস্তাব বিপিসির সম্ভাব্য ব্যয়ের চেয়ে দ্বিগুণ হওয়ায় পুরো দরপত্র বাতিল করা হয়। এরপর মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুনরায় টেন্ডারের প্রক্রিয়া শুরু করে পিটিসিপিএলসি।
এর মধ্যে পুনঃদরপত্র প্রক্রিয়া চলাকালে এসপিএম প্রকল্পটি অপারেশনের আগ্রহ দেখায় সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএসসি। এ নিয়ে গত ৪ ডিসেম্বর জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে আয়োজিত সভায় এসপিএমের অপারেশন কার্যক্রমের ওপর প্রেজেন্টেশন দেয় বিএসসি। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. এরফানুল হক ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভার কার্যবিবরণী পর্যালোচনা করে জানা যায়, সভায় উপস্থাপিত প্রেজেন্টেশনে উল্লেখ করা হয়- বিএসসি নিজস্ব জাহাজ ও মেরিন পেশায় দক্ষ জনবল দিয়ে দেশ-বিদেশে মেরিটাইম সেবা, অপরিশোধিত তেল ও সারসহ জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পণ্য পরিবহন সেবা দিয়ে আসছে। স্বাধীনতার পর থেকে প্রায় ৫৪ বছর বিপিসির আমদানি করা অপরিশোধিত তেল পরিবহনে বিএসসি একমাত্র অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান। এ ধারাবাহিকতায় বিপিসির এসপিএম অপারেশন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে চায় বিএসসি।
এজন্য বিএসসি দুই বছরের মধ্যে টাগবোটসহ আনুষঙ্গিক সব ইক্যুইপমেন্ট ক্রয় সম্পন্ন করবে এবং কারিগরি জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে শতভাগ দেশি লোকবল দিয়ে এসপিএম পরিচালনা করা হবে। বিএসসিকে এসপিএম পরিচালনার সার্বিক দায়িত্ব দেওয়া হলে ওয়ার্কিং পার্টনারের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন, কারিগরি জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে দুই বছর পর শতভাগ দেশি লোকবল ও টাগবোটসহ আনুষঙ্গিক ইক্যুইমেন্ট দ্বারা সম্পূর্ণ এসপিএম কার্যক্রম বিএসসির মাধ্যমে পরিচালনা সম্ভব হবে।
সভায় আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিএসসির নিজস্ব সক্ষমতা অর্জনের আগ পর্যন্ত ওয়ার্কিং পার্টনার/সাব-কন্ট্রাক্টর নিয়োগের মাধ্যমে বিএসসির মাধ্যমে এসপিএমের অপারেশন অ্যান্ড মেনটেন্যান্স কার্যক্রম শুরু করতে কতদিন সময় প্রয়োজন সেটি উল্লেখ করে সাতদিনের মধ্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে পত্রের মাধ্যমে অবগত করার জন্য বিএসসিকে জানানো হয়।
তবে বিএসসির পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় বিষয়টি নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই বিপিসির। আবার বিএসসির আগ্রহের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা না থাকায় এসপিএমের বর্তমান নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণাবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান পিটিসিপিএলসিও বিষয়টিতে তেমন পাত্তা দিচ্ছে না।
বর্তমানে নতুন বাল্ক জাহাজ কেনার বিষয়ে চীন সফরে রয়েছেন বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক। এসপিএম পরিচালনার আগ্রহের বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘এসপিএম অপারেশনের মূল কাজটা মেরিন অংশে। জাহাজ থেকে জ্বালানি খালাসের জন্য মেরিন অংশে এসপিএম হুকিং করার অভিজ্ঞতা বিপিসির নেই। যে অভিজ্ঞতা বিএসসির অনেক অফিসারের রয়েছে। এ কাজগুলো আমরা নিয়মিত করে আসছি। আমাদের জিএম প্ল্যানিংয়েরও এ ধরনের কাজের ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।’
‘তাছাড়া বিগত ৫৪ বছর ধরে বিপিসির আমদানি করা ক্রুডগুলো আমাদের জাহাজে পরিবহন করি। এসব জাহাজ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এসপিএম দিয়ে পেট্রোলিয়াম প্রোডাক্ট দেওয়া-নেওয়া করে। এ অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা এসপিএম অপারেশনের জন্য আগ্রহ দেখিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এসপিএম অপারেশনের কাজটি আমরা একা করবো না। আমরা অভিজ্ঞ কোম্পানিকে হায়ার আনবো। ইতোমধ্যে আমি অফিসিয়াল কাজে আরব আমিরাতে অবস্থানকালীন এসপিএম অপারেশনে বেলজিয়ামের একটি ওয়ার্ল্ড রিকগনাইজড কোম্পানির সঙ্গে মিটিংও করেছি।’
সিদ্ধান্ত হলে কমপক্ষে ১৫ বছর অপারেশন করার আগ্রহের কথা জানান তিনি। বলেন, ‘আমরা আগ্রহ দেখিয়েছি। মন্ত্রণালয়ে একটি মিটিংও হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের দুই থেকে আড়াই বছর অপারেশন করতে দেওয়ার কথা বলেছে। এক্ষেত্রে আমাদের পোষাবে না। তারপরেও মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রস্তাবনা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আমরা আগামী দু-একদিনের মধ্যে একটি প্রস্তাবনা জমা দেবো। এক্ষেত্রে কমপক্ষে ১৫-১৮ বছরের অপারেশনের জন্য প্রস্তাব করা হবে।’
তবে চলতি সপ্তাহেই এসপিএমের অপারেটর নিয়োগের পুনঃটেন্ডার আহ্বানের কথা জানিয়েছেন পিটিসি পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রায়হান আহমাদ। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘এসপিএম অপারেশন করতে শিপিং করপোরেশন চায় কী চায় না, সেটি আমরা জানি না। বিএসসির বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা নেই। তবে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন ঠিকাদার নিয়োগে রিটেন্ডার করা হচ্ছে। আগামী বৃহস্পতিবার বা রোববার পত্রিকায় প্রকাশ করা হবে।’
এ বিষয়ে বিপিসির পরিচালক (অপারেশন ও পরিকল্পনা) ড. এ কে এম আজাদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিএসসি পুরোটাই অপারেশন করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। বস্তুত তাদের এ ধরনের সক্ষমতা রয়েছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে না। তারপরেও আমরা তাদের (বিএসসিকে) বলেছি- তারা কতটুকু অপারেশন করতে পারবে, তা জানাতে। তারা যদি সক্ষমতা দেখাতে পারে, তাহলে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে। কিন্তু তাদের সেই সক্ষমতা নেই, তারাও অপারেটর নিয়োগ করবে। তারা যদি অপারেটর নিয়োগ করে, সেটা তো আমরা (বিপিসি) করলেই পারি।’
পাশাপাশি এসপিএম অপারেশনের অপারেটর নিয়োগের টেন্ডার প্রক্রিয়াও চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।
এমডিআইএইচ/এএসএ/এমএফএ/এএসএম