পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হকের নির্দেশ অমান্য করে শপিংমলের বাইরের সড়কে গাড়ি পার্কিং করা হচ্ছে। এর প্রভাবে রাজধানীর সড়কগুলোতে যানজট বৃদ্ধি পেলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না শপিংমল কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স ও নিউমার্কেটে গিয়ে চোখে পড়লো এই চিত্র। গত ১৫ জুন বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে রমজানে রাজধানীর নিরাপত্তা ও যানজট নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার নেতৃত্ব দেন আইজিপি শহীদুল হক। এতে পরিবহন মালিক সমিতি, ব্যবসায়ী সমিতি, ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন, শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াঁসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় নিজেদের নিরাপত্তায় সব শপিংমলের বাইরে ক্লোজ সার্কিড (সিসি) ক্যামেরা এবং সড়কে যাতে শপিং মলের গাড়ি পার্কিং না করা হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখার নির্দেশ দেন আইজি। তবে বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেল, শপিংমলের বাইরের সড়কে একটি লাইন করে প্রাইভেটকার, সিএনজি রাখা হয়েছে। শপিংমলের অনেক ক্রেতাকে আবার রাস্তার মধ্যে গাড়ি থামিয়ে নেমে যেতে দেখা গেছে। আর এতে যানবাহনের জটলা সৃষ্টি হয় পান্থপথ থেকে কারওয়ান বাজার সড়কে। এমনিতেই রমজান মাসের দিনগুলোতে অফিস ছুটির পর বিকেলে সড়কগুলোতে লেগে থাকে দীর্ঘ জট। শপিংমলের পার্কিং করা এসব গাড়ি সেই যানজটকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, ফুটপাথের পাশে গাড়ি রাখা এবং ড্রাইভার ও হকারদের ফুটপাথ দখলে দুর্ভোগে পড়েছে এই সড়কের পথচারিরা। আলাল হোসেন নামে এক পথচারী জাগো নিউজকে বলেন, এভাবে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে ফুটপাথে হাটাচলা মুশকিল হয়ে পড়েছে। সারাদিন হকার আর পার্ক করা গাড়ির চালকদের দখলে থাকে এই ফুটপাথ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শপিংমলের নিজস্ব সিকিউরিটি গার্ড আল-আমিন বলেন, শপিং মলের ভেতরের পার্কিংয়ে গাড়ি রাখার জায়গা খালি নেই, তাই না পেরে বাইরে গাড়ি রাখতে হচ্ছে। তবে এতে যানজট হওয়ার কোনো কারণ নেই। ট্র্যাফিক পুলিশের তেজগাঁও জোনের একজন পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তায় অতিরিক্ত সময় গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকার কারণে বিকেল থেকে এই সড়কের যানজট নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পরে। এমনকি এই গাড়িগুলোর কারণে রাত ১০টার পরেও এই সড়কে যানজট থাকে। একই অবস্থা রাজধানীর সাইন্সল্যাব থেকে নীলক্ষেতের উভয় পাশের সড়কে। নিউ মার্কেটের উদ্দেশ্যে আসা গাড়িগুলো সড়কের উপর ২-৩ লাইনে অবৈধভাবে পার্কিং করা। প্রায় ২৫ ফুট প্রশস্তের রাস্তায় গাড়ি চলে মাত্র ১২ ফুট সড়কে। বাকিটা গাড়ি দিয়ে ভরাট থাকে। শুধু তাই নয়, গাড়ি রাখার জন্য এখানে ২০ টাকা করে পার্কিং চার্জও আদায় করছেন কয়েকজন কমিউনিটি পুলিশ। এবিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের আইজি এ কে এম শহীদুল হক বলেন, সভায় নেয়া সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনাগুলো ফলোআপ করা হচ্ছে। এগুলোর বাস্তবায়ন সম্পর্কে নজরদারি করা হচ্ছে। যানজট নিরসনে ভূমিকা পালনের জন্য পুলিশের কমিশনার থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত সব পর্যায়ের সদস্যদের ব্রিফ করা হয়েছে। আমরা যানজট নিয়ন্ত্রণ ও জনদুর্ভোগ লাঘবের চেষ্টা করছি। এআর/বিএ/পিআর