দেশজুড়ে

৩ কোটি টাকা নিয়ে উধাও এনজিও

শরীয়তপুরে গ্রাহকদের প্রায় তিন কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে বেসরকারি সংস্থা ডামুড্যা মহিলা উন্নয়ন সোসাইটি (ডিএমইউএস) নামের একটি এনজিও। গত ১২ জানুয়ারি থেকে ডামুড্যা উপজেলার এ এনজিওর শাখাগুলোতে তালা ঝুলছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রতারিত অসংখ্য গ্রাহক।

শরীয়তপুর জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ডামুড্যা মহিলা উন্নয়ন সোসাইটি (ডিএমইউএস-রেজি:-মবিককা/শরী:/১৭৫/২০০৯ তারিখ:২৭অক্টোবর ২০০৯) নামে রেজিস্ট্রেশন নিয়ে ২০০৯ সালে কার্যক্রম শুরু করে এনজিওটি। বিদেশ ফেরত আব্দুল আজিজ মোল্লা নামে এক ব্যক্তি শরীয়তপুর ডামুড্যা পৌরসভার দক্ষিণ ডামুড্যাকে প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা দেখিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। এনজিওটি ইতিমধ্যে পূর্বডামুড্যা, কনেশ্বর, ইসলামপুর, সিড্যা, সিধুলকুড়া, কেহরভাংগা এলাকায় একাধিক শাখা অফিস হিসেবে ঘর ভাড়া নিয়ে পাঁচ বছর যাবৎ কার্যক্রম করে আসছিল।

এনজিও সংস্থার ওই ব্যক্তিরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বেকার যুবক ও যুবতীকে মাঠ কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয়। তারা মাঠ কর্মীর মাধ্যমে ১ লাখ টাকার ডিপিএস করলে প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা লাভ দেওয়ার কথা বলে। এছাড়া ১ লাখ টাকা ঋণের বিপরীতে ১০ হাজার টাকা ও ৫০ হাজার টাকা ঋণের বিপরীতে ৫ হাজার টাকা হারে জামানত সংগ্রহ করে।

এছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্পে সঞ্চয় স্কীমের নাম করে বিপুল পরিমাণ জামানত আদায় করা হয়। এ হিসেবে ওই কার্যালয়ের কয়েকশ গ্রাহক থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা গ্রহণ করে সংস্থাটি।

দক্ষিণ ডামুড্যা গ্রামের চায়ের দোকানদার আব্দুর রহমান মাদবর বলেন, ডামুড্যা মহিলা উন্নয়ন সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক আজিজকে বিশ্বাস করে তার এনজিওতে আমার মেয়ের শ্বশুর মান্নান রাড়ীকে ৫ লাখ টাকা রাখতে বলি। বিয়াই ২০১৫ সালের শেষ দিকে এই ৫ লাখ টাকা এনজিওতে রাখে। কিন্তু সেই টাকা নিয়ে আজিজ পালিয়েছে। এখন বেয়াই আমার উপর রাগ করে কথা বলেন না। টাকা না পেলে আমার মেয়ের সমস্যা হবে বলেছে। আমি এখন কী করি?

এদিকে এনজিও’র কর্মকর্তারা গত শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) গ্রাহকদের ঋণ দেয়ার নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করে। সকাল ১০টার দিকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাহকরা ঋণের জন্য এসে দেখে প্রধান কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে কর্মকর্তা উধাও হয়ে গেছে।

ডামুড্যা মহিলা উন্নয়ন সোসাইটির (ডিএমইউএস) নির্বাহী পরিচালক আব্দুল আজিজ মোল্লা অভিযোগ স্বীকার করে মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ব্যাংকে একটি লোনের চেষ্টা করছি। সেটা সাক্সেসফুল হলেই গ্রাহকদের টাকা পরিষদ করে দেব।

গোসাইরহাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল হাসান বলেন, আমি ব্যাপারটি শুনেছি। এনজিওটির ব্যাপারে এখনো অভিযোগ থানায় আসেনি। কেউ অভিযোগ করলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোজি আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, এ নামে এনজিও আছে কিনা আমাদের জানা নেই। প্রতারিত হওয়া গ্রাহকরা যদি আমাদের কাছে অভিযোগ করে অবশ্যই তদন্ত করে ওই এনজিওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ছগির হোসেন/এফএ/জেআইএম