আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত বেড়ে ১৫, একদিনের শোক ফিলিস্তিনে

৪২তম ভূমি দিবসের বিক্ষোভে উত্তাল গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে এ পর্যন্ত ১৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় শনিবার একদিনের শোক ঘোষণা করেছে ফিলিস্তিন সরকার। হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাজা থেকে ইসরায়েলের সীমান্তের দিকে মিছিল করে যাওয়ার পর তাদের ওপর ইসরায়েলি সৈন্যরা গুলি চালায়। খবর আল জাজিরার।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বিক্ষোভে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস একদিনের শোক ঘোষণা করায় শনিবার সব স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে আরও ১ হাজার চারশোর বেশি মানুষ আহত হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারগ্যাস ছুড়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, অন্তত ছয়টি জায়গায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা চলছে এবং তারা দাঙ্গায় উস্কানিদাতাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে।

ফিলিস্তিনিরা ভূমি দিবসের মিছিলের নাম দিয়েছে গ্রেট মার্চ টু রিটার্ন বা নিজের ভূমিতে ফিরে যাওয়ার মিছিল। সীমান্তের কাছে তারা পাঁচটি ক্যাম্প স্থাপন করে সেখানে অবস্থান নিয়েছে। ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের ভেতরে তাদের ফেলে আসা বাড়ি-ঘরে ফিরে যাওয়ার অধিকার চায়।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, গাজা-ইসরায়েল সীমান্তের কাছে পাঁচটি জায়গায় প্রায় সতের হাজার মানুষ অবস্থান নিয়েছে। এরা সেখানে গাড়ির টায়ার জ্বালাচ্ছে এবং সীমান্তের প্রাচীরের দিকে মলোটভ ককটেল ছুঁড়ছে।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরায়েলি সেনাদের হাতে নিহতদের মধ্যে ১৬ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি কিশোরও রয়েছে। ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস এই সহিংসতার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহ বলেছেন, তারা এক ইঞ্চি ফিলিস্তিনি জমিও ইসরায়েলের কাছে ছাড়বেন না। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের কোন বিকল্প নেই এবং আমাদের ফিরে যাওয়ার অধিকার ছাড়া এই সংকটের কোন সমাধান নেই।

গাজা-ইসরায়েল সীমান্তে সব সময় ইসরায়েলের কড়া সামরিক পাহারা থাকে। সেখানে ইসরায়েল তাদের সামরিক উপস্থিতি আরও বাড়িয়েছে। ফিলিস্তিনিরা প্রতি বছরের ৩০শে মার্চ ভূমি দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। ১৯৭৬ সালের এই দিনে ফিলিস্তিনিরা যখন তাদের জমি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিল, তখন ইসরায়েলি সৈন্যদের গুলিতে ছয়জন নিহত হয়।

ছয়সপ্তাহ ব্যাপী এই বিক্ষোভ শেষ হবে আগামী ১৫ মে। ওই দিনটিকে ফিলিস্তিনিরা নাকবা বা বিপর্যয় দিবস হিসেবে পালন করে। ১৯৪৮ সালের ওই দিনে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার পর লাখ লাখ ফিলিস্তিনি তাদের বাড়ি-ঘর ফেলে চলে আসতে বাধ্য হয়েছিল। ফিলিস্তিনিরা বহু দশক ধরে ইসরায়েলে তাদের ফেলে আসা বসত বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অধিকার দাবি করছে। কিন্তু ইসরায়েল এই অধিকারের স্বীকৃতি দেয়নি।

টিটিএন/এমএস