‘আমারে সবার সামনে বিবস্ত্র করছে। আমার আর বাঁচবার ইচ্ছা নাই। আল্লাহ তুমি হাসির বিচার কইরো।’ মঙ্গলবার শেরপুর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ শাপমারী গ্রামে নির্যাতিত নারীর খোঁজ নিতে গেলে এভাবেই তাদের সামনে বুক চাপড়ে চিৎকার করছিল সালিশি সভায় বিবস্ত্র নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ। এদিন দুপুরে নির্যাতিত গৃহবধূকে দেখতে শাপমারী গ্রামে গিয়ে ঘটনার সময় উপস্থিত লোকজনের সাথে কথা বলেন মহিলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। এসময় ওই গৃহবধূ কান্নায় ভেঙে পড়লে তারা তাকে মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেন। ঘটনাটির যাতে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হয় সেজন্য তারা প্রশাসন ও পুলিশকে যথাযথ গুরুত্বের সাথে তদন্ত করার আহ্বান জানাবেন বলে উল্লেখ করেন। পরে নির্যাতিতা গৃহবধূর আত্মীয়-স্বজন, গ্রামের সাধারণ মানুষ, ভাতশালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে তারা ঘটনাটি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও মতবিনিময় করেন।পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা নাসরিন বেগম বলেন, ওই গৃবধূকে প্রকাশ্যে যেভাবে বিবস্ত্র করা হয়েছে, তা কোনো সভ্য সমাজ মেনে নিতে পারেনা। তিনি বলেন, মামলা যে ধরনেই হোক আমরা দোষীদের শাস্তি দেখতে চাই। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে আমরা কথা বলবো। ভাতশালা ইউপি চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সাথে জামালপুর জেলার লোকজনও জড়িত থাকায় আমি ভিকটিম ও তার আত্মীয়স্বজনকে আইনের আশ্রয় নিতে বলেছি।শেরপুর সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী কহিনুর বেগম বিদ্যুৎ ও শহর মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আঞ্জুমান আরা বেগম লিপি বলেন, তদন্তে জানতে পেরেছি ঘটনার সাথে জড়িত প্রধান আসামি জয়নাল আবেদীন ওরফে হাসি ওই এলাকার প্রভাবশালী ও গুণ্ডা প্রকৃতির লোক। তার নেতৃত্বেই গৃহবধূকে বিবস্ত্র করা হয়েছে। তাই দ্রুত তাকে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক বন্দে আলী মিয়া বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ওই নারীর জামা-কাপড় ছিড়ে ফেলার সত্যতা পাওয়া গেছে। স্বাক্ষ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রধান আসামি জয়নাল আবেদীন ওরফে হাসিকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।হাকিম বাবুল/এমএএস/আরআইপি