বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ মানেনি বেসরকারি খাতের ১৩ ব্যাংক। কৃষি ঋণ বিতরণ বেগমান করতে প্রত্যেক ব্যাংককে আলাদা বিভাগ গঠনের জন্য এই নির্দেশ দিয়েছিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গভর্নর ড. আতিউর রহমান দায়িত্বভার নেওয়ার পর কৃষি ও এসএমই ঋণ বিতরণকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অথচ ব্যাংকগুলোর এমন অনাগ্রহে রীতিমতো বিব্রত কেন্দ্রীয় ব্যাংক।এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে রোববার সকালে বলেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কৃষি ঋণ বিতরণে বিভাগ বা সেল গঠনে যে অনাগ্রহ দেখিয়েছে সেটি কোনভাবেই কাম্য ছিলো না। আমরা পর্যালোচনা করছি। খুব শিগগিরই আবার সময় বেধে দিয়ে চিঠি দেওয়া হবে।তিনি ব্যাংকগুলোর উদ্দেশ্যে সর্তকতা উচ্চারণ করে বলেন, রেগুলেটরি নির্দেশ পরিপালন না করার ফল কখনোই সুখকর হয় না।অবশ্য কৃষি ঋণ বিভাগের মহা-ব্যবস্থাপক প্রভাস চন্দ্র মল্লিক জাগো নিউজকে বলেন, কিছু ব্যাংক আমাদের নির্দেশ পরিপালন করেনি। আমরা ২০ জুলাই পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছিলাম। তবে আমরা আবার চিঠি দিয়ে সময় বেধে দিবো। এখান থেকে পিছু হঠার কোন সুযোগ দেওয়া হবে না।জানা গেছে, কৃষি ঋণ বিতরণ বাড়াতে বিদেশিসহ সব ব্যাংকে আলাদা কৃষি ঋণ বিভাগ বা সেল গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত জুন মাসের ১৭ তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ থেকে আদেশটি জারি করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই আদেশে বলা হয়, ব্যাংকগুলোকে প্রতিটি শাখায় অন্তত একজন কর্মকর্তাকে কৃষি ঋণ সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে দায়িত্ব দিতে হবে। আগামী ২০ জুলাইয়ের মধ্যে এ নির্দেশনা কার্যকর করে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাতে বলা হয়েছে। দেশে বর্তমানে ৫৬টি ব্যাংক কার্যরত রয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানার সোনালী, জনতা, অগ্রণী, বিশেষায়িত খাতের বাংলাদেশ কৃষি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ও বিডিবিএলে আলাদা বিভাগ বা সেল ও শাখা পর্যায়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রয়েছেন। এখন রাষ্ট্রীয় মালিকানার রূপালী ও বেসিক এবং বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোকে আলাদা বিভাগ গঠন ও শাখা পর্যায়ে লোক নিয়োগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।নির্দেশনাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম চালিকাশক্তি কৃষি। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কৃষি ঋণ বিতরণ, আদায় এবং সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও তদারকি জোরদার করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে প্রতিটি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কৃষি ঋণ সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য আলাদা বিভাগ বা সেল গঠন করতে হবে। আর এ বিভাগ পরিচালনায় প্রয়োজনীয় লোকবল পদায়ন এবং শাখা পর্যায়ে ন্যূনতম একজন কর্মকর্তাকে কৃষি ঋণ সংশ্লিষ্ট সব কাজের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে দায়িত্ব দিতে হবে।সূত্র বলছে, প্রতিটি ব্যাংক এখ পর্যন্ত প্রতিটি শাখায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিয়োগও চূড়ান্ত করতে পারেনি।যে কয়েকটি ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ পরিপালন করতে পারেনি, তাদের বেশির ভাগই বিদেশি খাতের ব্যাংক। এছাড়া বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক রয়েছে। এছাড়া বেসিক ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংক কার্যক্রম শুরু করলেও অগ্রগতি নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ বাড়াতে সুদহার কমানোসহ নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও এখাতে কিছু ঘাটতি তৈরি হয়। এসএ/এআরএস/এমএস