ঈদের ছুটিতে রাঙ্গামাটিতে স্থানীয়দের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। তবে জেলার বাইরে থেকে আশানুরুপ পর্যটকের আগমন ঘটেনি পর্যটন নগরী রাঙামাটিতে।
ঈদের ছুটিতে সপ্তাহজুড়ে পর্যটকে মুখর থাকে রাঙ্গামাটি শহর। কিন্তু এবারই প্রথম রাঙ্গামাটিতে বাহিরের পর্যটকদের আগমন ঘটেছে কম। শহরের ঝুলন্ত ব্রিজ, রাজবন বিহার, আরণ্যক, হ্যাপি আইল্যান্ড, সুবলং ঝরণা, বেরান্যা, বড়গাঙসহ বিভিন্ন পর্যটন স্থানে স্থানীয় পর্যটকদের ভিড় দেখা গেছে। বাহির থেকে আসা তেমন কোনো পর্যটকের দেখা মেলেনি।
এ কারণে পর্যটন নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো অলস সময় পার করছে। বিভিন্ন হোটেল-মোটেলগুলোতেও তেমন কোনো বুকিং নেই। সম্প্রতি পাহাড় ধস, পাহাড়ের স্থানীয় রাজনৈতিক অস্থিরতা ও পর্যটকদের বিনোদনের সুবিধা কম থাকার কারণেই রাঙ্গামাটি থেকে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে মনে করছেন পর্যটন সংশিষ্টরা।
গাজীপুর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে আসা মিজানুর রহমান বলেন, আমরা ছয় বন্ধু মিলে তিনটি মোটরবাইক নিয়ে রাঙ্গামাটিতে বেড়াতে এসেছি। রাঙ্গামাটি অনেক সুন্দর একটি জায়গা। পাহাড় ও হ্রদের যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়।
রাঙ্গমাটির স্থানীয় পর্যটক ফিরোজ আল মাহমুদ সুজন বলেন, আমি ঈদের ছুটিতে সময় কাটানোর জন্যে পরিবার নিয়ে ঝুলন্ত সেতুতে এসেছি। বিশেষ কোনো ছুটির সময়গুলোতেই এখানে আসা হয়।
হ্যাপি আইল্যান্ডে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা লিজা আক্তার বলেন, ঈদের ছুটি তাই পরিবারের সকলকে নিয়ে বেড়াতে এসেছি। শিশুদের বিনোদনের জন্যে এখানে বিভিন্ন কিছু রয়েছে তাই তাদের জন্যে এখানে আসা।
বোট ইজারাদার রমজান আলী বলেন, স্থানীয় পর্যটক বেশি দেখা যাচ্ছে কিন্তু বাহির থেকে তেমন কোনো পর্যটক আসেনি। দৈনিক প্রায় ৩০-৩৫টি বোট ভাড়া হচ্ছে। আশা ছিলো এ বছর আরও বেশি হবে। কিন্তু নানান কারণে পর্যটকদের উপস্থিতি কম বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় কুটির শিল্পের পণ্য বিক্রেতা নন্দিতা চাকমা বলেন, আমরা আশায় থাকি ঈদের সময় রাঙ্গামাটিতে পর্যটকরা আসবে, আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হবে। কিন্তু রাঙ্গামাটির নানান সমস্যার জন্যে পর্যটকরা এখান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই এবছর তেমন কোনো পর্যটকের দেখা মিলেনি।
ট্যুরিস্ট পুলিশের এএসআই আবুল কালাম বলেন, যে সকল পর্যটক রাঙ্গামাটির বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে আসছে তাদের নিরাপত্তার জন্যে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। তাদের নিরাপত্তা দেয়ার জন্যে ট্যুরিস্ট পুলিশ বিভিন্ন স্থানে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, রাঙ্গমাটিতে স্থানীয় পর্যটক বেশি, বাহির থেকে কম এলেও পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল ৫০% বুকিং রয়েছে। আবাসিক পর্যটকের উপস্থিতি কম হওয়ায় পর্যটনে কিছুটা ভাটা পড়েছে।
আরএআর/এমএস