কোথাও মাছ। কোথায় হরেক রকম সবজি। আছে বাহারি ফলও। পোশকই বা বাদ থাকবে কেন? আছে জমা, টি-শার্ট, জুতাও। এটি কোনো মহল্লার বাজার বা সুপার মার্কেটের চিত্র নয়। এটি রাজধানীর কমলাপুর ওভারব্রিজের চিত্র।
বাসাবো-মুগদা থেকে কমলাপুর, মতিঝিল, আরামবাগে পায়ে হেঁটে যাতায়াতকারীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে ওভারবিজটি নির্মাণ হলেও, এটি এখন ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ওভারব্রিজটির তিন ভাগের দুই ভাগই দখলে রেখেছেন ব্যবসায়ী। মুগদার দিক থেকে কমলাপুর স্টেশনের দিকের শেষ পর্যন্ত একই অবস্থা। ফলে ওভারব্রিজ ব্যবহারকারী স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, ট্রেনের যাত্রী, অফিসকর্মী সবাইকেই পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। ঘটে পকেট মারের ঘটনাও।
ভুক্তভোগীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই ওভারব্রিজটি ব্যবসায়ীদের দখলে। মাঝে কয়েকবার উচ্ছেদ করা হলেও কিছুদিন পরেই তারা আবার আসে। ফলে ওভারব্রিজে যাতায়াতকারীদের বিভিন্ন সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।
রাইফা নামের এক স্কুল শিক্ষার্থী বলেন, ওভারব্রিজ ব্যবহার করে সহজেই স্কুলে যেতে পারি। সকালে ওভারব্রিজ দিয়ে ভালোভাবে যেতে পারলেও ফেরার পথে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। ঠেলাঠেলি করে হাঁটতে হয়। আবার অনেকে বিব্রতকর ইঙ্গিত করে। আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাই। সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি ওভারব্রিজটা চলাচলের উপযোগী করে দেয়া হোক।
আরামবাগের একটি অফিসের কর্মকর্তা মো. হাসান সোহেল বলেন, কিছুদিন আগে অফিস শেষে ফেরার সময় ওভারব্রিজে আমার মানিব্যাগ হারিয়েছি। ভিড়ের মধ্যে কে যে মানিব্যাগ নিয়ে নিল বুঝতেই পারলাম না। ওভারব্রিজের এমন অবস্থা সবাই জানে, কিন্তু কেউ পদক্ষেপ নেয় না। পথচারী পারাপারের ওভারব্রিজে এভাবে বাজার বসে কোনো সভ্য দেশে খুঁজে পাবেন না।
ওভারব্রিজে পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসা শাহিন বলেন, অনেকদিন ধরেই এখানে ব্যবসা করি। কারও কোনো অভিযোগ নেই। বেলা ১১টার পর থেকে রাত পর্যন্ত আমাদের পাওয়া যাবে।
সবজি বিক্রেতা মিনহাজ বলেন, সব পক্ষকে ম্যানেজ করেই এখানে ব্যবসা করি। দুপুরের আগেই আমরা পণ্য নিয়ে আসি। তবে বাজার জমজমাট হয় বিকেলের পর। আমাদের কাছে সবজির দাম তুলনামূলক কম। সে কারণে অফিস শেষে ফেরার পথে অনেকেই এখান থেকে সবজি কেনে।
মুগদার দিক থেকে ওভারব্রিজটিতে উঠেই ডানদিকে দেখা যাবে কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ী দোকান দিয়েছেন। এদের একজন বলেন, যে কোনো মাছ বাজারের চেয়ে কম দামে বিক্রি করি। ফলে ক্রেতাও ভালো পাই। প্রভাবশালীদের মাসোহারা দিয়েই এখানে ব্যবসা করতে হয়। কিন্তু সব সময় শান্তিতে ব্যবসা করা যায় না। কারণ যে কোনো সময় পুলিশ অভিযান চালাতে পারে।
এমএএস/এএইচ/এমএস