খাদ্যের কথা ভাবলে পুষ্টির কথাও ভাবুন- প্রতিপাদ্যে সারাদেশে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ- ২০১৯ পালিত হচ্ছে। নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) থেকে পুষ্টি সপ্তাহ পালন শুরু হয়েছে।
পুষ্টি সপ্তাহের আয়োজন করেছে ঢাকা জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটি ও সিভিল সার্জন অফিস। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে গতকাল সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এতে আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরে ডা. শামস উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ আজ স্বাস্থ্য ও পুষ্টি খাতের উন্নয়নে সারা বিশ্বে রোল মডেল। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জনগণের পর্যাপ্ত পুষ্টির জোগান নিশ্চিত করা অপরিহার্য। কারণ বেঁচে থাকার জন্য শারীরিক, মানসিক ও কর্মদক্ষতা উন্নয়নে পুষ্টির গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে।
দেশের প্রতিটি নাগরিককে জাতীয় সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে নারী-পুরুষ ও শিশুদের জন্য মানসম্পন্ন পুষ্টি নিশ্চিত করা জরুরি। এ জন্য খাদ্যের সঙ্গে পুষ্টির কথা ভাবতে হবে। এ লক্ষ্যে সারা দেশের মতো ঢাকা জেলাতেও পুষ্টি সপ্তাহ পালনের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী যে একশ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে আমরা তার শতভাগ পালন করতে পেরেছি। বর্তমানে দেশে পুষ্টিহীনতায় শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার কমেছে। দেশে অতি দরিদ্রের হার ১০ শতাংশের নিচে, দরিদ্র রয়েছে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ। তাই বলা যায়, অতি দারিদ্রের নিচে যারা রয়েছে তারাই পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। সে হিসেবে বর্তমানে দেশে ১০ শতাংশের মতো মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।
সুস্থ জাতি গঠনে স্কুল হেলথ প্রোগ্রামের বিকল্প নেই বলে সংবাদ সম্মেলনে মত দেন চিকিৎসকরা। সে লক্ষ্যে ঢাকার সিভিল সার্জন অফিসের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। চিকিৎসকরা জানান, স্কুল শিক্ষার্থীদের সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ঢাকা জেলার ৫টি উপজেলার ৭০০ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষকদের নিয়ে ১ দিনব্যাপী ২০টি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩টি স্কুল হেলথ ক্লিনিক নিয়ে ঢাকা জেলাতে বর্তমানে স্কুল হলেথ প্রোগ্রাম চালু আছে।
ঢাকা জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটি ও ঢাকাস্থ সিভিল সার্জন অফিস জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উদযাপন লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুষ্টি পরিষদের নির্দেশনা মোতাবেক র্কমসূচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- বিকেলে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের নিয়ে মৌসুম অনুযায়ী ফলমূল ও শাকসবজি উৎপাদন সংক্রান্ত আলোচনা ও প্রতিযোগিতা।
২৫ এপ্রিল সকাল দশটায় মাঠ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হবে মা-বাবা, বউ-শাশুড়িদের নিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার নির্বাচন প্রতিযোগিতা, স্কুল পর্যায়ে পুষ্টি, স্যানিটেশন ও হাইজিন বিষয়ে পাঠদান, বিকেলে আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।
২৬ এপ্রিল তেজগাঁও থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে পুষ্টি মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ২৭ এপ্রিল ঢাকা জেলার সকল কমিউনিটি ক্লিনিকে আইওয়াইসিএফ সেবা প্রদান, গর্ভবতী ও প্রসূতি মাকে খাদ্য বৈচিত্র বিষয়ক এবং কিশোর কিশোরীদের পুষ্টি, ওয়াশ প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক কাউন্সেলিং প্রদান করা হবে।
ষষ্ঠ দিনে বৃদ্ধদের পুষ্টি, বহুপাক্ষিক অবহিতকরণ ও আলোচনা সভা এবং সুশীল সমাজের সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণে সমাপনী দিনে আলোচনা অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হবে। ঢাকা জেলার ৫টি উপজেলায় একই সঙ্গে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ পালন করা হবে।
এমএসএইচ/এমকেএইচ