দেশের সর্ববৃহৎ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ১৬টি টয়লেট সংস্কার করা হলেও তা ব্যবহার করতে পারছেন না শ্রমিক-কর্মচারীরা। সংস্কারকাজ সম্পন্ন হওয়ার পরও প্রায় তিন মাস অজ্ঞাত কারণে টয়লেটগুলো তালাবদ্ধ। এতে বিপাকে পড়েছেন এখানকার কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীরা।
বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় শীতের মৌসুমে প্রস্রাব-পায়খানার জন্য কারখানার বাইরে অথবা কারখানার ভেতরে জঙ্গলে যেতে হচ্ছে তাদের। এ ঘটনায় শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অভিযোগ, টেন্ডার ছাড়াই সংস্কারকাজ শুরু করা-সংক্রান্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো তথ্য দিতে চাইছেন না।
ভুক্তভোগী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারখানার অভ্যন্তরে শ্রমিকদের ব্যবহৃত প্রায় ৫৭টি টয়লেট রয়েছে। তিন মাস আগে এ টয়লেটগুলো সংস্কারকাজ শুরু করা হয়। কিন্তু মাত্র ১৬টির কাজ সম্পন্ন করার পর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সংস্কার করা ১৬টি টয়লেটও অজ্ঞাত কারণে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে ক্যারেজ শপ, সিএন্ডডাবলু শপসহ কয়েকটি শপের শ্রমিকরা টয়লেটগুলো ব্যবহার করতে পারছেন না। টয়লেটগুলো সংস্কার হওয়ার পরও তালাবদ্ধ কেন- জানতে চাইলে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মো. জয়দুল হক বলেন, ‘সংস্কারের বিষয়টি বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান উদ্দিন জানেন। এ ব্যাপারে আমার জানা নেই।’
কত টাকার কাজ, কয়টি টয়লেট সংস্কার করার কথা ছিল এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম কী-জানতে চাইলে তিনি এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বলেন, এই ছোট ব্যাপার নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কোনো প্রয়োজন নেই। এ ব্যাপারে সহকারী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, রেলওয়ে কারখানায় টয়লেট সংস্কারের বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। রেলওয়ে কারখানার সার্বিক কর্তৃপক্ষ ডিএস। তিনিই এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবেন। বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ কর্তৃপক্ষ সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করে থাকে। তারাই এ সংক্রান্ত তথ্য দিতে পারবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ কর্তৃপক্ষের সৈয়দপুর শাখার ইনচার্জ মো. তহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, কারখানার ভেতরে টয়লেট সংস্কারের কাজ সম্পর্কে ডিএস স্যারই ভালো জানেন। আমি কিছুই বলতে পারব না।
সূত্র জানায়, প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৭টি টয়লেট সংস্কারের কাজ শুরু হয়। তবে টেন্ডার না দিয়ে ঠিকাদারের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে কাজ দেয়ায় অন্যান্য ঠিকাদারের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। যার ফলশ্রুতিতে বিষয়টি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এলে কাজ থামিয়ে দেয়া হয়।
জাহেদুল ইসলাম/এসআর/এমকেএইচ