রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত বর্জ্য রাশিয়া ফেরত নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে সংশোধিত প্রোটোকল অনুমোদনের বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ তথ্য জানান। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে সংশোধিত প্রোটোকল অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শেষ হওয়ার পরপরই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি একটি নিউক্লিয়ার পাওয়ার কোম্পানি পরিচালনা করবে। ওই কোম্পানির মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জনবল নিয়োগ করা হচ্ছে। রাশান ফেডারেশনের সঙ্গে স্বাক্ষরকৃত জেনারেল কন্ট্রাক্টের অধীনে ওই জনবলের প্রশিক্ষণ চলছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায় এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে অপারেশন শুরুর পর থেকে সুষ্ঠুভাবে যাতে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করা যায় সেজন্য রাশান ফেডারেশনের সহযোগিতা প্রয়োজন। সেজন্য কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে।’ খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘সংশোধন হলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আইজিএ-এর আওতায় রাশান ফেডারেশনের সহযোগিতা নেয়া সম্ভব হবে। যা এই বিদ্যুৎকেন্দ্র সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’ এই প্রোটোকলটি ২০১১ সালের ২ নভেম্বর বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে চুক্তি সই হয় বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, ‘একটা বিষয় আজ বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে, আমরা বিষয়টি ক্লিয়ার করে দিতে চাই।’
‘যেহেতু আমাদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই এবং আমাদের জায়গা ছোট, সুতরাং প্ল্যান্ট চালানোর ফলে যত গার্বেজ আসবে সব রাশান কর্তৃপক্ষ এ দেশের বাইরে নিয়ে গিয়ে তা ডিসপোজ করবে। আমাদের টেরিটরিতে কোনো কিছু ডিসপোজাল হবে না। আজকে এই জিনিসটা ক্যাবিনেট মিটিংয়ে অ্যাসোসিয়েট আলোচনা হিসেবে ক্লিয়ার করে দেয়া হয়েছে। যত গার্বেজ আসবে রাশান কর্তৃপক্ষ এই দেশের টেরিটরির বাইরে নিয়ে ডিসপোজ করবে।’ এ সময় উপস্থিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুরাইয়া আকতার জাহান বলেন, ‘ওয়ারেন্টি পিরিয়ডের পরে পাওয়ার প্ল্যান্টের কীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ হবে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা ছিল না। ওয়ারেন্টি পিরিয়ডের পরে আমরা রাশিয়ার কাছ থেকে, অপারেশন চলাকালীন যেসব বিষয়ে সহযোগিতা দেব সেগুলো হল- কনসাল্টিং সার্ভিস, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণকারীদের প্রশিক্ষণ, উপকরণ সরবরাহ।’ কত বছর অপারেশনাল সার্ভিস রাশিয়া অব্যাহত রাখবে- জানতে চাইলে উপসচিব বলেন, ‘সুস্পষ্টভাবে বছরের কথাটা বলা হয়নি। অপারেশনাল পিরিয়ড বলতে যতদিন এই পাওয়ার প্ল্যান্ট সচল থাকে। এটা ৬০ বছর সচল থাকার কথা, পরবর্তী সময়ে এটাকে আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে ১০০ বছরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। অপারেশন শুরুর পর ওয়ারেন্টি পিরিয়ড ১২ মাস।’ আরএমএম/জেএইচ/এমকেএইচ