মশার উৎপাতে জনজীবন অতিষ্ঠ। কিন্তু বিপুল পরিমাণ বরাদ্দ থাকলেও সে অনুযায়ী মশকনিধনে নেই দুই সিটি করপোরেশেনের তেমন কোনো কার্যক্রম। তাই মশা নিয়ে দুর্ভোগ বাড়ছে। তাই মশকনিধনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জোরাল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
নগরবাসীরা বলছেন অন্য সময়ের চেয়ে মশার উপদ্রব খুব বেড়েছে। দিনেও মশার হাত থেকে রেহাই নেই। অন্যদিকে সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দরজা-জানালা সব বন্ধ করে বদ্ধভাবে থাকতে হয়। অথচ মশকনিধনে দুই সিটি করপোরেশেনের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা।
এ-সংক্রান্ত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, গত ডেঙ্গু মৌসুমে (আগস্ট-নভেম্বর) মশার ভয়াবহতা রাজধানীবাসীর মধ্যে যে ভয় ঢুকিয়েছিল, তা এখনও কাটেনি বলা যায়। এর মধ্যে ফের রাজধানীতে বেড়ে গেছে মশার উপদ্রব। বাসাবাড়ি, দোকানপাট, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত সর্বত্রই মশার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে নগরজীবন। মশার এই উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় নগরবাসীকে তাড়া করছে গত ডেঙ্গু মৌসুমের ভয়।
জানা গেছে, গত মৌসুমে এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কয়েক লাখ মানুষ চিকিৎসা নেন। গত ১০ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, সরকারি হিসাবেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১৩৩ জন। ওই ভয়াবহতার কারণে সেই মৌসুমে মশার ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রমে ব্যাপকভাবে তৎপর হয় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন।
কিন্তু গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে নগরের দুই ভাগেই মশার ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রমে ধীরগতি দেখা যায়। সেজন্য জানুয়ারির শেষ দিক থেকে মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। আর এখন পরিস্থিতি আতঙ্কে রূপ নিয়েছে। ফলে নগরবাসী দিন পার করছেন গত মৌসুমের ভয়াবহতা ভেবে।
মশা শুধু দুর্ভোগই সৃষ্টি করে না। ডেঙ্গু, জিকা ভাইরাসহ বিভিন্ন মরণঘাতী রোগের জীবাণুও বহন করে। এ জন্য মশার উপদ্রব বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে এডিস মশার সংখ্যা যাতে বৃদ্ধি না পায় এ লক্ষ্যে সিটি করপোরেশন সরকার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। মানুষজনকে সচেতন করে তুলতে হবে। এ বিষয়ে নাগরিক সচেতনতাও গুরুত্বপূর্ণ। বাসাবাড়ির আঙিনা, ফুলের টব, ছাদের বাগান, ভবনের চৌবাচ্চা, এসি-ফ্রিজ থেকে জমা পানিতে মশার বংশ বিস্তার বেশি ঘটে। এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।
সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নানা সময় মশকনিধনের নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ হয় না। দিন দিন রাজধানীতে মশার উৎপাত বেড়েই চলেছে। মশক নিধনে তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। অথচ এ জন্য বাজেট রয়েছে। রয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত লোক। মশকনিধন নিয়ে কোনো ধরনের অবহেলা বা শৈথিল্য মেনে নেয়া যায় না।
এইচআর/পিআর