মতামত

কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আইসিটি বিভাগ ও প্রতিমন্ত্রী পলক

জুয়েল কিবরিয়া

বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে এক কোটিরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে যেখানে মৃতের সংখ্যা প্রায় সোয়া পাঁচ লাখ। আমাদের দেশেও আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে বহু আগেই এবং মারা গেছে প্রায় এক হাজার নয়শো মানুষ। দেশের এই দুঃসময়েও বরাবরের মতো জনগণের পাশে আছেন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। করোনার সংক্রমণরোধে প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে দিন-রাত পরিশ্রম করে চলেছেন তিনি। দূরদর্শী এই তরুণ নেতা দেশে করোনা বিস্তারের আগেই বিশ্ব প্রেক্ষাপটে সম্ভাব্য পরিস্থিতি আঁচ করে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এ জন্য করোনা পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্য, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, খাদ্য, ত্রাণ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দফতরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে চলেছেন। অন্যদের প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি নিজ দফতরের কাজ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলমান রাখতে পেরেছেন। একইসাথে নিজের নির্বাচনী এলাকায় সংক্রমণ ঠেকাতে সজাগ দৃষ্টি রেখেছেন তিনি। করোনার এই প্রাদুর্ভাবের সময় আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর কর্মতৎপরতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সবার দৃষ্টি বিশেষভাবে আকর্ষণ করেছে। এই নিবন্ধে তাঁর সামগ্রিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরার প্রয়াস চালানো হবে।

অনলাইন সাংবাদ সম্মেলনকরোনাবিস্তারের শুরুতেই যখন বিভিন্ন সংবাদ সম্মেলনে শারীরিক উপস্থিতি নিয়ে সংবাদকর্মীগণ প্রশ্ন তুলছিলেন ঠিক তখনই (২০ মার্চ) তিনি দেশের ইতিহাসে প্রথম অনলাইনে সংবাদ সম্মেলন করেন। তারই দেখানো পথ ধরে পরবর্তী সময়ে সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় এই ট্রেন্ড চালু হয় যেখানে আইসিটি বিভাগ প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

ভার্চুয়াল অফিসকরোনাভাইরাসের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আইসিটি বিভাগের এটুআই কর্তৃক প্রবর্তীত ই-নথির মাধ্যমে প্রতিটি সরকারি অফিস তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম চালু রাখে। গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও পথ বাতলে দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী; সবার স্বাস্থ্যনিরাপত্তা বজায় রেখে কাজ চলমান রাখতে ২৩ মার্চ থেকে তিনি নিয়মিত অনলাইনে জুম অ্যাপের সাহায্যে অফিসের দৈনন্দিন কার্যক্রমসহ সব ধরনের সভা পরিচালনা শুরু করেন।

নিজ এলাকায় তৎপরতামাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা পরিস্থিতিতে নিজ এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন চলনবিলের মাটি ও মানুষের নেতা পলক। অসহায় ও কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের মাঝে খাদ্যবিতরণের পাশাপাশি ধানকাটা শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় কৃষকের মাঝে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কম্বাইন হার্ভেস্টার ও রিপার মেশিন হস্তান্তর করেন। দলীয় কর্মীদের সাথে নিয়ে নিজেও সরাসরি ধান কাটায় অংশগ্রহণ করেন। নাটোরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সদর হাসপাতালে স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রদান করেন। একসময়ের ২৩ চরমপন্থীকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে গত ২৮ এপ্রিল তুলে দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুদান। চলনবিলের সাধারণ মানুষ করোনা প্রাদুর্ভাবের সময়ও তাদের সন্তান পলককে আগের মতোই পাশে পেয়ে স্বস্তিতে আছে।

ভেন্টিলেটর তৈরির উদ্যোগআইসিটি প্রতিমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে কয়েকটি দেশীয় প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদক কোম্পানি গত ৩১ মার্চ ভেন্টিলেটর তৈরির উদ্যোগ নেয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জীবনরক্ষাকারী ভেন্টিলেটরসহ অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরিতে তারা কাজ শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৮ এপ্রিল বিশ্বখ্যাত মেডিকেল যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মেডট্রনিক্স ও ওয়ালটনের কারিগরী সহযোগিতায় দেশেই তৈরি হয় বিশ্বমানের পিবি-৫৬০ মডেলের স্পেসিফিকেশনে ‘ডব্লিউপিবি-৫৬০ ভেন্টিলেটর’।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবাপ্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্যসেবা ও পরামর্শ প্রদানের জন্য আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে চালু হয় ‘প্রবাসবন্ধু কলসেন্টার’। ফলে সৌদি আরব ও বাহরাইনে কর্মরত প্রায় ২৪ লাখ প্রবাসী ঘরে বসেই সেবা নিতে পারছেন স্বেচ্ছাসেবী ডাক্তারগণের মাধ্যমে। আইসিটি বিভাগের সার্বিক সহায়তায় জনগণের কাছে গুজব বা মিথ্যা তথ্যের বিপরীতে সঠিক ও সর্বশেষ তথ্য পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে হোয়াটসঅ্যাপের প্রায় সাড়ে তিন কোটি ব্যবহারকারীর জন্য ২৩ এপ্রিল একটি ইনফোবট চালু করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া করোনাভাইরাসের ঝুঁকি নির্ণয়ের জন্য আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর উদ্যোগে জনপ্রিয় ভাইবার বটে ২ মে চালু করা হয় ‘লাইভ করোনা টেস্ট’। অন্যদিকে ভার্চুয়াল প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা দিতে ১৪ এপ্রিল চালু করা হয় ‘হ্যালো ডক’। প্রাথমিকভাবে এর মাধ্যমে প্রায় ৪০ জনের বেশি ডাক্তারের সমন্বয়ে একটি দক্ষ টিম রোগীদের সেবা প্রদান করছেন। মেসেঞ্জারের মাধ্যমে বিনামূল্যে এ সেবা নিতে ভিজিট করতে হবে web.facebook.com/amarlab.bd এই লিংকে।

বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জকরোনার প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ঘরে বসে নিজের বাড়ি, হাসপাতাল ও ফার্মেসিসহ প্রয়োজনীয় স্থানের তথ্য একটি ম্যাপে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে গত ৮ এপ্রিল শুরু হয় ‘বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ’ ক্যাম্পেইন। প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের পরিকল্পনা মোতাবেক এই ক্যাম্পেইন বাস্তবায়নে আইসিটি বিভাগের সাথে কাজ করে বাংলাদেশ স্কাউটস ও গ্রামীণফোন। ডিজিটাল সার্চিং ম্যাপে সংযুক্ত করার মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্য নিয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও স্থানের তথ্য ম্যাপে সংযুক্ত করা শুরু হয় পলকের আহ্বানে। যেকোনো স্থান থেকে Bangladeshchallenge.com এই ঠিকানায় গিয়ে সঠিক ম্যাপিং লোকেশন নিবন্ধন করা যাবে।

কল ফর নেশনবর্তমান ও ভবিষ্যতের জাতীয় সংকট মোকাবিলায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর উদ্যোগে “কল ফর নেশন” প্লাটফর্ম তৈরি করা হয় গত ৩০ মার্চ। উদ্যোক্তাবান্ধব এ প্লাটফর্মের আওতায় 'কোভিড-১৯' প্রতিরোধে প্রযুক্তিগত সমাধান খুঁজে বের করতে অনলাইন প্রতিযোগিতা আহ্বান করা হয়। গত ৮ জুন দেশের তরুণবিজ্ঞানী, উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের জমা দেয়া ৬৮১টি প্রকল্প থেকে ৬টি ক্যাটাগরিতে ৬টি প্রকল্পকে বিজয়ী ঘোষণাসহ সর্বমোট ৩৬টি পুরস্কার দেয়া হয়। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গত ২২ জুন শুরু হয় ‘জাতীয় হাই-স্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা-২০২০। এর আগে ৬২টি দলের অংশগ্রহণে দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড।

ত্রাণ বিতরণে প্রযুক্তিমাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনা পরিস্থিতিতে তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে দ্রুততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি বিভাগ ১৯ এপ্রিল থেকে যৌথভাবে কাজ শুরু করে। এ লক্ষ্যে একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ তৈরি ও জাতীয় তথ্যসেবা হেল্পলাইন ৩৩৩-এর কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি কিউআর কার্ড ও ফেস রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে উপকারভোগীদের কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ তৈরির জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করে দিয়েছে জুনাইদ আহমেদ পলকের আইসিটি বিভাগ।

ন্যাশনাল ডেটা অ্যানালিটিকস টাস্কফোর্সআইসিটি প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ১৮ এপ্রিল থেকে কাজ শুরু করে “ন্যাশনাল ডেটা অ্যানালিটিকস টাস্কফোর্স”। করোনার বিস্তার ঠেকাতে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে যাচ্ছে এই টাস্কফোর্স। সারাদেশ থেকে প্রতিদিন পাওয়া তথ্য আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ১১টি প্রস্তাব করেছে টাস্কফোর্স। ন্যাশনাল ডেটা অ্যানালিটিকস টাস্কফোর্স করোনার তথ্য-উপাত্ত (ডেটা) বিশ্লেষণ করে সংক্রমণের মাত্রা ও মৃত্যুর হার অনুযায়ী বিভিন্ন এলাকাকে লাল, হলুদ এবং সবুজ জোনে ভাগ এবং লাল ও হলুদ জোনকে কীভাবে সবুজ জোনে পরিণত করা যায় সে ব্যাপারে করণীয় ও সুপারিশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে তুলে ধরছে।

কোভিড-১৯ ট্র্যাকারকরোনাভাইরাসের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে গত ২০ এপ্রিল মানচিত্রভিত্তিক "কোভিড-১৯ ট্র্যাকার" তৈরি করেছে আইসিটি বিভাগ। ভাইরাসটি কীভাবে ছড়াচ্ছে প্রতিমুহূর্তে এর হালনাগাদ তথ্যচিত্র প্রকাশ করা হচ্ছে এর মাধ্যমে। প্রতিমুহূর্তে covid19tracer.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে আক্রান্ত, সুস্থ, সংকটাপন্ন ও মৃত রোগীর সংখ্যা। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ৪ জুন পরীক্ষামূলকভাবে ব্লুটুথ ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ‘করোনা ট্রেসার বিডি’ অ্যাপ চালু করা হয়েছে।

টেলিমেডিসিনআইসিটি বিভাগের উদ্যোগে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা গেম চেঞ্জার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ১৩ মে ‘পাঠাও টেলিমেডিসিন’ সেবার উদ্বোধন করেন। খরচ ও ঝুঁকি কমাতে ইতোমধ্যে ‘প্রভা’ ও ‘সহজ’ এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো টেলিমেডিসিন সেবা চালু করেছে। এর মাধ্যমে অধিক সংখ্যক মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে যাচ্ছে। অন্যদিকে একইদিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হয়েছে বিশেষায়িত টেলিহেলথ সেন্টার।

একদেশআর্তমানবতার সেবায় দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছ থেকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনুদান ও আর্থিক সহায়তা সংগ্রহের জন্য গত ১৫ মে আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে ডিজিটাল ক্রাউডফান্ডিং প্লাটফর্ম ‘একদেশ’ চালু করা হয়। জাকাত কিংবা আর্থিক অনুদান প্রদান করতে একদেশ ওয়েবসাইট অথবা ‘একদেশ’ অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অনুদান গ্রহীতা হিসেবে যুক্ত আছে। ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল পেমেন্ট অথবা ডিজিটাল ওয়ালেটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জাকাত কিংবা অনুদান দেয়া যাবে এই প্লাটফর্মটিতে।

ই-ব্যাংকিং সেবাগ্রাহকদের সুরক্ষায় ঘরে বসে ব্যাংকিং সেবা দেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে সোনালী ব্যাংক। এ লক্ষ্যে ৩ জুন ব্যাংকের প্রথম মোবাইল অ্যাপস সোনালী ই-সেবা উদ্বোধন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। দ্রুততম সময়ে এই সেবা নিশ্চিত করার জন্য গ্রাহকের ছবি ও ব্যক্তিগত তথ্য স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে যাচাই-বাছাই করে দেবে আইসিটি বিভাগের সফটওয়্যার ‘পরিচয়'। এই সফটওয়্যার গ্রাহকের যেকোনো তথ্য (কেওয়াইসি) নিমিষেই বাংলাদেশ জাতীয় ডিজিটাল আর্কিটেকচারের (বিএনডিএ) সাথে মিলিয়ে নিতে পারবে।

এডুকেশন ফর নেশনকরোনা মহামারির মধ্যে ঘরবন্দি শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসের জন্য ১ জুন ‘এডুকেশন ফর নেশন’ প্লাটফর্ম চালু করা হয়। এই প্লাটফর্মের মাধ্যমে নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাসগুলো অনলাইনে নেয়া হচ্ছে। ৬০ মিনিটের প্রতিটি ক্লাসে ৪৫ মিনিট পাঠদান ও ১৫ মিনিট প্রশ্ন-উত্তর পর্ব থাকছে; প্রতিদিন চারটি করে ক্লাস হচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের এই দূরদর্শী উদ্যোগে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার যে মডেলটি তৈরি হয়েছে তা পর্যায়ক্রমে দেশের সবকয়টি সরকারি স্কুল ও কলেজে চালু করা হবে।

ফুড ফর নেশনআইসিটি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় গত ২৩ মে বাংলাদেশের প্রথম উম্মুক্ত কৃষিপণ্য প্লাটফর্ম ফুড ফর নেশন চালু করে কৃষি মন্ত্রণালয়। কৃষক, বাজারজাতকারী, আড়ৎদার, বিপণনকারী আর প্রাতিষ্ঠানিক ভোক্তা একই প্লাটফর্মে পণ্যের দাম ও মান যাচাইয়ের পাশাপাশি সরাসরি বাণিজ্যিক যোগাযোগেরও সুযোগ পাবেন। রেজিস্ট্রেশন করে কৃষিপণ্য নির্বাচন করতে, বিনামূল্যে বিজ্ঞাপন দিতে ও কেনাকাটা করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। স্টার্টআপ বাংলাদেশের মাধ্যমে এখানে যুক্ত ক্রেতা-বিক্রেতার প্রোফাইলে দেয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় ও সুবিধামতো মাধ্যম নির্বাচন করে লেনদেন করা যাবে।

প্লাজমা প্লাটফর্মকোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় প্লাজমা সংগ্রহ এবং সরবরাহ সহজ করার লক্ষ্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর উদ্যোগে স্বাস্থ্যসেবা অধিদফতরকে সাথে নিয়ে ৯ জুন ‘সহযোদ্ধা’ প্লাজমা নেটওয়ার্ক প্লাটফর্ম গড়ে তোলা হয়। ডাক্তার প্লাজমা থেরাপি দেয়ার পরামর্শ দিলে আক্রান্ত রোগীর জন্য সহযোদ্ধার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করে প্লাজমা খোঁজা এবং সংগ্রহ করার প্রয়োজনীয় সব সুবিধা থাকছে এখানে।

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আইসিটি বিভাগের সবাইকে সাথে নিয়ে অনলাইনে ব্যতিক্রমী ঈদ পুনর্মিলনী আয়োজন করেন। দেশের সকল প্রান্তে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি থাকায় দেশবাসী করোনা পারিস্থিতিতেও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ঈদ আনন্দ উদযাপন করেছে। ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস এবং ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীও উদযাপন করা হয় ডিজিটাল প্লাটফর্মে।

করোনা মহামারিতেও একটি মুহূর্ত থেমে নেই প্রতিমন্ত্রী পলক। বাংলাদেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহারের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে কাজ করছে তাঁর আইসিটি বিভাগ। এ লক্ষ্যে একটি গাইডলাইন ও টাইমফ্রেম ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। সম্প্রতি ই-নামজারির জন্য জাতিসংঘের ‘ইউনাইটেড নেশনস পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ পেয়েছে সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়। এই পুরস্কার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ ও জাতির সম্মিলিত অর্জন।

মাননীয় আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিকনির্দেশনা মোতাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের তৎপরতায় ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নামক যে পরিবর্তনের গল্প সূচিত হয়েছে তা দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য সেক্টরে অচিরেই প্রতিফলন হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

লেখক : জনসংযোগ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ।ই-মেইল: kibriamcj@gmail.com

এইচআর/বিএ/এমএস